শ্রমবাজার চালু করার পেছনে আবারও সেই পুরনো চক্র ক্রিয়াশীল। আবারও যারা সিন্ডিকেট করেছিল তারাই অন্য আবরণে সিন্ডিকেট করতে চাচ্ছে। এরা আমাদের সরকারের ওপর প্রেসার ক্রিয়েট করছে। সরকার ভাবছে যে, আমাদের লোক যাচ্ছে না।
লোক যাওয়া কমে যাচ্ছে। সুতরাং আমাদের তো পাঠাতে হবে। দুনুমনু করছে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠাবে কি না। সেই জায়গাটাকেই সুধীসমাজের পক্ষ থেকে আমরা দৃঢ় কণ্ঠে বলেছি, কোনো অবস্থাতেই এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠানো উচিত হবে না।
কারণ এই কর্মীগুলো সেখানে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন, কাজ পাচ্ছেন না ও রাস্তাঘাটে পড়ে থাকছেন। সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে তাঁরা এই অবস্থার মধ্যে পড়ছেন। এই অবস্থাটাই আমরা কোনো অবস্থাতেই আবার চালু করতে চাই না। যতই বলা হোক এবার তারা ভালো ব্যবহার করবে।
আজকে ৪০ থেকে ৫০ বছরে কেউ যদি ভালো ব্যবহার না করে থাকে, এখন হঠাৎ করে ভালো ব্যবহার করবে, সেটা হয় না। এবার যদি আবারও ২৫, ৩০ ও ৫০ জন নিয়ে সিন্ডিকেট করা হয় তাহলে এই সিন্ডিকেট কী করে তা আমরা জানি। এই সিন্ডিকেশন তখন আবার সব রিক্রুটিং এজেন্সিকে সাব-এজেন্ট করে তুলবে। ওদের সাব-এজেন্টের মাধ্যমে তারা কর্মী পাঠিয়ে সাড়ে চার লাখ টাকার সঙ্গে আরো দেড় লাখ টাকা যোগ করে। এটা অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান নয়।
এই বাজার খোলার জন্য সহজ কোনো পথ নেই। ওইখানে যে হোম অফিস বলি, হিউম্যান রিসোর্চ অফিস বলি, প্রতিটি জায়গায় দুর্নীতি। এমনকি একেবারে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত এই দুর্নীতি রয়েছে। কারণ এই যে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়, এটার ভাগ তারা সবাইকে দেয়।
এখন তারাই বলে যে সিন্ডিকেট ছাড়া কর্মী পাঠাতে পারব না। অথচ বাকি ১৪টি দেশ কিন্তু সিন্ডিকেট ছাড়া কর্মী পাঠায়। সুতরাং আমাদেরও ১৪টি দেশের মতো কর্মী পাঠানোর সুযোগ দিতে হবে। এ জন্য সরকারকে শক্ত হতে হবে।
লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ