বেশ কিছু দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিলো, ঝালকাঠির রাজনৈতিক অঙ্গনে কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। বাতাসে ভেসে বেড়ানো গুঞ্জন অবশেষে সত্যি হলো। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ঝালকাঠির কৃতি সন্তান বিশ্ব ব্যাংকের সদ্য সাবেক সিনিয়র স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড. এসএম জিয়াউদ্দিন হায়দার স্বপন। ঝালকাঠি, তথা বৃহত্তর বরিশালে সত্যিকার অর্থে একজন কর্মীবান্ধব নেতার অভাব আপনার মাধ্যমে পূরণ হবে- এটাই প্রত্যাশা।
ঝালকাঠির সদর উপজেলার নৈকাঠিতে এক সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে উঠে আসা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দারের পরিবার জাতীয়তাবাদী আদর্শে দীক্ষিত। বাবা মরহুম হরমুজ আলী সিনিয়র সহকারী সচিব ছিলেন। ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের প্রথম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়া হায়দার আশির দশকে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এবং শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে পেশাদার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং উন্নয়ন ব্যক্তিত্ব হিসেবে এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার পঁয়ত্রিশটি দেশে টেকসই স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও টেকসই উন্নয়নে ত্রিশ বছর কাজ করেছেন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কমিশনের সঙ্গেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সর্বশেষ তিনি বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ হিসেবে গত ফেব্রুয়ারিতে অবসর নেন। শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা শেষে ফিলিপাইন ইউনিভার্সিটি থেকে খাদ্য ও পুষ্টি পরিকল্পনায় মাস্টার্স এবং সুইডেনের উমিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পুষ্টি ও মহামারি বিদ্যায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে জিয়া হায়দার কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির অ্যাডজাঙ্কট অধ্যাপক। তিনি করোনাকালে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতার তুখোড় সমালোচনা করে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে আশু করণীয় নিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় লেখালিখি করেন।
সাত ভাই-বোনের মধ্যে জিয়া হায়দার সবার বড়ো। তিন ভাই চিকিৎসক ও শেরে বাংলা মেডিকেলের সাবেক ছাত্র। অন্যজন শিক্ষক এবং তিন বোনই উচ্চশিক্ষিত। মেঝো ভাই অধ্যাপক কামাল উদ্দিন হায়দার শাহীন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। সেঝো ভাই অধ্যাপক ডা. খালিদ মাহমুদ শাকিল ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক। তিনি শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। চতুর্থ ভাই ডা. এসএম আনোয়ার পারভেজ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি এবং কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন।
জিয়া হায়দার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আদর্শ সৈনিক। তার মতো ব্যক্তিত্বকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীতে রাখা ভবিষ্যৎ অনুজদের জন্য একটি বার্তা। আগামী দিনে পরিচ্ছন্ন ইমেজ, ভালো ক্যারিয়ার ও দীর্ঘ পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের মূল্যায়নের এ যেন পরোক্ষ ইঙ্গিত।
বিএনপির মতো জনবান্ধব বিশাল একটি দলে, জিয়া হায়দারের মতো ব্যক্তিত্বের এই অবস্থান ঝালকাঠির জন্য আর্শিবাদ স্বরূপ। গাছ যতো বড়ো হয়, ছায়া ততো বড়ো হয়; ততো বড়ো ছায়া, ততো বড়ো আশা করা হয় তার কাছে। এমনটাই প্রত্যাশা থাকবে তার কাছে। দক্ষিণের জানালা খুলে রুদ্ধদ্বার অন্ধকার বদ্ধ ঘরে আলোকবর্তিকা নিয়ে আসবেন জিয়া হায়দার। তিনি তারেক রহমানের আস্থার প্রতিদান দেবেন, তার মতো লোকের কাছ থেকে এটা পুরোপুরি আশা করা যায়।
-আহমেদ আল আমীন: লেখক, মানবাধিকারকর্মী।