৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে মুখে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত খোকন চন্দ্র বর্মন রাশিয়ায় সফলভাবে প্রথম ধাপের রিকনস্ট্রাকশন সার্জারি সম্পন্ন করে দেশে ফিরেছেন। উন্নত চিকিৎসার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তাকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছিল।
গত ২২ এপ্রিল রাশিয়ার একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে খোকনের মুখের প্রথম ধাপের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। অস্ত্রোপচারের শুরুতে তার মুখের (3D) মডেল তৈরি করা হয়, এরপর নিচের চোয়ালে (ম্যান্ডিবল) টাইটেনিয়ামের প্লেট প্রতিস্থাপন এবং অস্টিওসিন্থেসিস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এই সময় তার মুখ থেকে তিন থেকে চারটি ছররা গুলির অংশ অপসারণ করা হয়।
অপারেশনের পরপরই তার সার্বিক অবস্থার খোঁজখবর নেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম এবং উপদেষ্টার বিশেষ সরকারি প্রফেসর ডা. সাইদুর রহমান খসরু।
আজ বুধবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে খোকন কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তার সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান। বিমানবন্দরে তাদের অভ্যর্থনা জানান বিমানবন্দরের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শামীমা সুলতানা।
চিকিৎসকদের মতে, খোকনের মুখের গঠন পুনর্গঠনে দ্বিতীয় ধাপের সার্জারি হবে সবচেয়ে জটিল। এতে উপরের চোয়াল (ম্যাক্সিলা) রিকনস্ট্রাকশন করা হবে, যা তার মুখমণ্ডলের চূড়ান্ত অবয়ব নির্ধারণ করবে। এই অপারেশনটি রাশিয়ার একজন জাতীয় অধ্যাপক ও আরও দুই জন অভিজ্ঞ সার্জন যৌথভাবে পরিচালনা করবেন বলে জানা গেছে।
দ্বিতীয় ধাপের সার্জারি জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময় খোকনের বাম চোখের এনুক্লেশন (চোখের বল সম্পূর্ণ অপসারণ) করা হবে। এরপর তৃতীয় ধাপে তার নাকের পুনর্গঠন (নাক কনস্ট্রাকশন) করা হবে, যা সম্পন্ন হবে বুকের পাঁজরের হাড় ব্যবহার করে। এই ধাপটি সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্তমানে খোকন চন্দ্র বর্মন সুস্থ আছেন এবং তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/মুসা