মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত শ্রীলঙ্কার তিন নাগরিককে বাগেরহাটের মোল্লাহাট থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় চার অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়। অপহরণে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একজন নেতা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে মোল্লাহাট উপজেলার দক্ষিণ আমবাড়ি গ্রামের এমদাদ কাজীর বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া তিন শ্রীলঙ্কান নাগরিকরা হলেন- মালাভি পাথিরানা, পাথিরানা ও থুপ্পি মুদিইয়ানসেল্যাগ নীল।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার আটজুড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি দক্ষিণ আমবাড়ি গ্রামের সেরাত কাজীর ছেলে কাজী এমদাদ হোসেন (৫২), একই এলাকার সবুর শেখের ছেলে শহিদুল শেখ (২৪), চরকুড়িয়া এলাকার এস এম শাহাবুদ্দিনের ছেলে শামসুল আলম (৪৫) ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার খাটিয়াগড় গ্রামের জাকির শেখের ছেলে জনি শেখ (৩৮)।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রীলঙ্কার তিন নাগরিকের সঙ্গে একটি অপহরণকারী চক্রের পরিচয় হয়। পরে ‘যৌথ ব্যবসার প্রস্তাব’ দিয়ে তাদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়।
চক্রটির সদস্য শহিদুল শেখ বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার আমবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা শ্রীলঙ্কান নাগরিকদেরকে ২২ এপ্রিল ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রহণ করেন। ওই দিন রাতটা তারা ঢাকার একটি হোটেলে অবস্থান করেন। পরদিন একটি মাইক্রোবাসে করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় মোল্লাহাট উপজেলার দক্ষিণ আমবাড়ি গ্রামে, যেখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কাজী এমদাদ হোসেনের বাড়িতে তাদের আটকে রাখা হয়।
এরপর চক্রটি শ্রীলঙ্কায় ভুক্তভোগীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ দাবি করে। বিষয়টি শ্রীলঙ্কান সরকার অবগত হলে তারা বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কান হাইকমিশনের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়** এবং পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়।
বিষয়টি জানাজানির পর শুরু হয় তোলপাড়। শ্রীলঙ্কার পরিবারের সঙ্গে মুক্তিপণের জন্য যে নম্বর থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল, সেটি মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়।
বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল হকের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে আটজুড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজী এমদাদ হোসেনের বাড়ি থেকে ওই তিন শ্রীলঙ্কান নাগরিককে উদ্ধার করে। অভিযানে চার অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/মুসা