বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন করলে ভারত যাওয়ার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এই সভার আয়োজন করে নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ন্যাব)।
সরকারের উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আপনারা অনেকদূর তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, না হলে কিন্তু বিপদ হতে পারে। কোনো ঘটনায় আবেগবশত সিদ্ধান্ত নিয়েন না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাত ও ওয়েলফেয়ার খাতে উদ্যোগ নিন।
তিনি বলেন, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল একজন মহীয়সী নারী ছিলেন। একজন ধনী পরিবারের মেয়ে হয়ে তিনি সমাজকল্যাণ কাজে নেমে আসেন। তিনি মানুষের সেবার জন্য নার্সিং পেশা চালু করেন। তিনি শত্রু-মিত্র সবার সেবা করেছেন। আমাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে সেটি রাজনৈতিক কারণে, সেখানে নার্সিংয়ের যে মহিমান্বিত রূপ- যা মনোমুগ্ধকর। তাদের সেবার ভাষা আমি প্রকাশ করতে পারব না। পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সেবা মায়ের সেবা। একজন নার্স মায়ের সেবা হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু আমাদের দেশে নার্সকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়। তাদের প্রতি বৈষম্য দেখানো হয়।
তিনি আরও বলেন, শুধু আমাদের দেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে এ অবস্থা। এমনকি নার্সদের আবাসন সুবিধা নেই। তাদের কাজের কারণে তিন শিফটেও কাজ করতে হয়, কিন্তু ক্যাম্পাসে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। নিজের বেতন থেকে বাসা ভাড়া দিতে হয়। আমাদের যেমন ভালো ডাক্তার দরকার, তেমনি নার্সদের যে লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার সেটি দিতে হবে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, উড়াল সেতু, মেগা প্রজেক্ট কি চিবিয়ে চিবিয়ে খাব নাকি, যে দেশের হিউম্যান উন্নতি হয় না, সে দেশ কখনো সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। লুটপাট ও পাচার হওয়া টাকার অর্ধেক স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করলে দেশ উন্নতি লাভ করত। করোনার সময় স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম করেছে, যার নায়ক দরবেশ এখন জেলে আছেন।
রিজভী বলেন, জানি না এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যখাত কীভাবে দেখবে, অথচ অত্যন্ত জরুরি এই সার্ভিসটা। কেন আমি ডলার খরচ করে ইন্ডিয়াতে যাব? কেন তাদের টাকা দিয়ে আসব? তারা প্রতি মুহূর্তে আমাদের নিয়ে নেগেটিভ বয়ান তৈরি করে অপপ্রচার করছে। তাদের পেছনে যদি এই আমরা ডলার খরচ না করে, এই টাকাগুলো যদি আমাদের নার্স-ডাক্তারদের পেছনে খরচ করি, তাহলে ইন্ডিয়ায় যাওয়ার তো কোনো কারণই থাকতে পারে না। ডাক্তারদের লজিস্টিক সাপোর্ট ঠিক করতে পারলেই তো কেউ ওই ( ইন্ডিয়া) দিকে যেত না। সেই কাজগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে করা দরকার ছিল।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাহানারা সিদ্দিকী।
এ সময় বক্তব্য দেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারীসহ অনেকে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ