নিমন্ত্রণের তো আর সময় নেই। যদিও শীতে অন্যান্য সময়ের চেয়ে দাওয়াত একটু বেশিই থাকে। আর এ সময়ের একটা বিশেষ সুবিধা- জমকালো পোশাক পরাসহ ভারী মেকআপ সবই করা যায়। নিরীক্ষার সুযোগ থাকে...
শীত মানে নানা অনুষ্ঠান, নানা আয়োজন। তবে নিমন্ত্রণে যাওয়ার আগে কী পরবেন, কীভাবে সাজবেন, চুল কেমন হবে; খুঁটিনাটি কত কি! উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- নিমন্ত্রণের পোশাক কেমন হওয়া চাই, কিংবা সাজসজ্জা এবং অলংকার নির্বাচনেও হতে হবে পারদর্শী। কিন্তু অনেকের তো তা সম্পূর্ণ অজানা। তাই সবার জ্ঞাতার্থে জেনে রাখা ভালো, নিমন্ত্রণে যাওয়ার আগে প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে আপনি কী ধরনের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। তা কি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান নাকি অন্য কোনো অনুষ্ঠান তা ভাবতে পারেন। প্রোগ্রামের ধরনের ওপর ভিত্তি করেই নিজেকে সাজিয়ে তুলতে হবে। অনেক অনুষ্ঠানে ড্রেসকোড দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে আপনাকে তাদের নির্ধারিত পোশাক পরেই সেখানে যাওয়া উচিত। এসবের বাধ্যবাধকতা না থাকলে আপনাকে জেনেবুঝে এবং পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে সাজগোজ করতে হবে।
নিমন্ত্রণের সাজ-পোশাকশীতের অনুষ্ঠানের মধ্যে বিয়ে অনুষ্ঠানের পোশাকটা একটু জমকালো হলেই ভালো। এ ছাড়া জন্মদিন, বিয়েবার্ষিকী বা গেট-টুগেদার-জাতীয় অনুষ্ঠানে সিল্ক, সুতি, কোটা, অ্যান্ডি জামদানি এ ধরনের পোশাক বা শাড়ি মানানসই। ট্র্যাডিশনালের বাইরে সাজতে চাইলে ফিউশন পোশাক বেছে নিতে পারেন। জিন্স, লেগিংসের সঙ্গে ফতুয়া, শার্ট টপস বা কামিজও ভালো লাগে। শীতের সময় গর্জিয়াস পোশাকে কালো রংকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়া অন্য কোনো উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরলেও ভালো লাগবে। শীতের কথা মাথায় রেখে এসব অনুষ্ঠানে জামদানি অথবা কোটা শাড়ি পরাই শ্রেয়। শাড়ির সঙ্গে ফুলস্লিভের ব্লাউজ পরতে পারেন। ফ্যাশনের সঙ্গে শীত তাড়াতেও কাজে দেবে। হালকা রঙের শাড়ি পরলে এর সঙ্গে ম্যাচিং করে ভারী শাল অথবা কার্ডিগ্যান পরতে পারেন। শাড়ির এক সাইডে শাল ছেড়ে দিলেও দেখতে বেশ স্টাইলিশ লাগবে। সময় বাঁচাতে শাড়ির বদলে পার্টিতে ফুলস্লিভ সালোয়ার-কামিজ অথবা ফতুয়া বেছে নেন। এর সঙ্গে ছোট শাল অথবা চাদর পরুন।
আমাদের দেশে নারীদের ফরমাল অ্যাটায়ার বলতে বোঝায় শাড়ি, কামিজ, কুর্তা, ওয়াইড বা সেমি ওয়াইড প্যান্ট, সিগারেট প্যান্ট। তবে এখন অনেক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ফরমাল প্যান্ট-স্যুটের চল আছে। তাই এ নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে দুইভাবে। এথনিক এবং ওয়েস্টার্ন পার্টি লুক। যদি অফিস ওয়্যার হয় শাড়ি, তাহলে অফিস থেকে বেরিয়ে বা পার্টিতে গিয়ে এর ওপর পরে ফেলতে পারেন লং জ্যাকেট বা শ্রাগ। এগুলো না চাইলে শাড়ির সঙ্গে মিক্স বা ম্যাচ করে এক সাইডে ঝুলিয়ে নিতে পারেন বড় ওড়না বা শাল। এগুলো পেছন দিক থেকে ঘুরিয়েও পরা যায়। কামিজ বা কুর্তির ক্ষেত্রেও একই জিনিস করা যায়। এমনকি এমন দিনে- প্লেন ওড়না বা স্কার্ফের বদলে জমকালো ওড়না বা স্কার্ফ পরে নেওয়া যায়।
কিছু পরিবর্তন না করে এক্সেসরিজ দিয়েই একটা অসাধারণ পার্টি লুক তৈরি করা সম্ভব। অফিসে কোনো জমকালো গয়না পরা যায় না। পার্টির দিন ব্যাগে রাখুন পছন্দের সিলভার, মেটাল, মুক্তা, বিডস বা স্টোনের গয়না। যাঁরা কি রকমের গয়না পরবেন, বুঝে উঠতে পারেন না, তাঁদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ বিকল্প হলো সিলভার, মেটাল বা মুক্তার গয়না। কারণ অফিসে খুব হালকা রং এবং ডিজাইনের শাড়ি পরা হয়। এ ধরনের পোশাকের ক্ষেত্রে অনেক ভালো মানায়। তাছাড়া কামিজ বা কুর্তির ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে।
আর হ্যাঁ, অফিস শেষে যদি দাওয়াতে যেতে হয় তাহলে প্রস্তুতিটা একটু আগে থেকেই নেওয়া ভালো। ব্যাগে রাখলেন প্রয়োজনীয় কিছু মেকআপ কিট। দরকার হলে অফিসে যাওয়ার সময় শাড়ি বা পোশাকটাও আলাদা একটা ব্যাগে নিয়ে নিন। অফিস শেষে ওয়াশরুমে গিয়ে ঝটপট সাজ বদলে ফেলেন। আবার সম্ভব হলে সকালে বাড়ি থেকেই পোশাক পরে নিতে পারেন, সঙ্গে থাকল হালকা সাজ। তাহলে দাওয়াতে যাওয়ার আগে কেবল টাচআপ করে নিলেই হবে।
সাজ-মেকআপ টিপস
♦ মেকআপের আগে অবশ্যই ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ক্লিনজিং মিল্ক লাগিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
♦ ময়েশ্চারাইজার লাগানোর আগে টোনার দিয়ে মুখ ভালো করে মুছে নিন।
লিকুইড ফাউন্ডেশন মুখ-ঘাড়-গলায় ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।
♦ ফাউন্ডেশন দেওয়ার পরও মুখে রেখা বা দাগ থাকলে কনসিলার ব্যবহার করুন। এরপর ফেস পাউডার দিয়ে ফাউন্ডেশনটা বসিয়ে দিন।
♦ পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চোখে আইশ্যাডো ও গ্লিটার দিন।
♦ গালের উঁচু হাড় বরাবর ব্লাশন লাগান। ব্লাশন ব্যবহারের সময় দৃষ্টিকটু যেন মনে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
♦ লিপস্টিক লাগানোর আগে লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে নিতে হবে। তারপর লিপস্টিক লাগান।
বিডি প্রতিদিন/এমআই