ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের নিবন্ধন পেয়েছে বরিশালের আমড়া। বুধবার বিকালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন সুগন্ধায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের হাতে নিবন্ধন সনদ তুলে দেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, বরিশালের আমড়া শুধু একটি সুস্বাদু ফল নয়, এটি এ অঞ্চলের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বতন্ত্র স্বাদ, পুষ্টিগুণ এবং বহুমুখী ব্যবহার বরিশালের আমড়াকে সারা দেশে পরিচিতি দিয়েছে। এই স্বীকৃতির ফলে স্থানীয় কৃষকরা আমড়া চাষে আরও উৎসাহিত হবেন।
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে খুশি কুমিল্লাবাসী : কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। গত বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়। এতে আনন্দিত কুমিল্লার খাদির গ্রাহক ও ব্যবসায়ীসহ সবাই। কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ২০০ থেকে ২৫০টি খাদি পোশাকের দোকান রয়েছে। হাতে বোনা এখানকার খাদির সুনাম ছড়িয়ে আছে দেশজুড়ে। মিহি সুতায় দৃষ্টিনন্দন, আরামদায়ক হওয়ায় এ পোশাক তরুণ থেকে বৃদ্ধ সবারই পছন্দের শীর্ষে থাকে। খাদির পাঞ্জাবি, শাড়ি, থ্রি-পিস, ফতুয়া, শার্ট ও বিছানার চাদরসহ বাহারি ডিজাইনের বিভিন্ন পোশাক রয়েছে। নামিদামি ফ্যাশন শপে খাদি কাপড় আরও বৈচিত্র্য ও আকর্ষণীয় করে বাজারজাত করা হচ্ছে। খাদি এখন শৈল্পিকতার ছোঁয়ায় দেশ-বিদেশে সমাদৃত। নগরীর খাদিঘরের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খাদি শিল্পে নান্দনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। দেশ বিদেশে যাচ্ছে খাদির বিভিন্ন পোশাক। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতে আমরা খুশি। সাংস্কৃতিক সংগঠক জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন, খাদির স্বীকৃতির খবরে আমরা আনন্দিত। আশা করছি এখন থেকে দেশ-বিদেশে কুমিল্লার খাদি কাপড়ের চাহিদা আরও বাড়বে। কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক বলেন, ১৯২১ সালে ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা হয়। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর খাদি বলে নামকরণ হয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। পরে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান। অবশেষে জিআই স্বীকৃতি খাদিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিল। কুমিল্লার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকেই খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য কাজ শুরু হয়। মৃৎশিল্পটির স্বীকৃতি নিয়েও আমরা আশাবাদী।