বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছররা গুলিতে নারায়ণগঞ্জে দুই চোখের আলো হারানো মাহবুব আলমের পাশে শেষ পর্যন্ত স্ত্রীও রইলেন না। তার এ অবস্থা জেনে স্ত্রী তার সংসারের বিচ্ছেদ ঘটিয়ে বাবার কাছে ফিরে গেছেন। পরিশোধ করা হয়েছে দেনমোহরের টাকাসহ সব পাওনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চাষাঢ়ায় চোখে গুলিবিদ্ধ হন মাহবুব আলম। এতে তাঁর চোখের নার্ভ ছিঁড়ে যায়। সেই সঙ্গে বাঁ চোখের পর্দাও ফেটে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আপাতত আর দেখতে পাবেন না তিনি। জার্মানি কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে চিকিৎসা সম্ভব। কিন্তু আর্থিক সংগতি না থাকায় সেদিকে আর পা বাড়ায়নি পরিবার। এমন অবস্থার মধ্যেই দিন চলছিল। সম্প্রতি তার স্ত্রী সংসার থেকে বিদায় নিয়েছেন। সবশেষ পারিবারিক সমঝোতার মাধ্যমেই দেনমোহরের টাকাও নিয়ে গেছেন। মাহবুব আলম বলেন, ‘আমার স্ত্রী বাস্তবতার বিষয়টি চিন্তা করেই হয়তো চলে গেছেন। যেহেতু তিনি চলে গেছেন সে হিসেবে দেনমোহর তার প্রাপ্য। পারিবারিকভাবে আলোচনার মাধ্যমেই দেনমোহরের টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা তার অধিকার। অন্যথায় তার কাছে আমি ঋণী থাকতাম। তিনি সুখী হোন সেই দোয়া করি। এ বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নেই আমার।’ মাহবুবের মা হালিমা বেগম বলেন, ছেলের চোখ রক্ষায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাঁচ দিন পর ২৩ জুলাই ভারতের চেন্নাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আবার তাঁর চিকিৎসা চলে থাইল্যান্ডে।
১৭ দিন সেখানে অবস্থানের পর ১৫ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে আসেন তাঁরা। ওই সময় চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, মাহবুবের চোখের আলো ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।