জুলাই গণ অভ্যুত্থানে যে নারীরা সামনের সারিতে ছিলেন সেই নারীদের বেঁচে থাকাই এখন বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবাদ করলে মবের শিকার হতে হচ্ছে। গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে নারীদের হয়রানি করা হচ্ছে। নারীর প্রতি এই বিদ্বেষের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারও নীরব। বাংলাদেশকে পরিবর্তনের জায়গায় নিতে হলে নারীদের আরও সক্রিয় ও সোচ্চার হতে হবে।
গতকাল আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নারী সংহতি আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘নারীমুক্তির আকাঙ্ক্ষা : গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী বাস্তবতা’ শিরোনামে মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে সবাই এক হয়েছিল। এখন নারী বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে তাড়ানো গেছে কিন্তু ফ্যাসিজম রয়ে গেছে। একটি শক্তিশালী গোষ্ঠী নারীদের সক্রিয় উপস্থিতি সহ্য করতে পারে না। সম্প্রতি লালমাটিয়ায় ধূমপান করাকে কেন্দ্র করে মব (উচ্ছৃঙ্খল জনতার দল) সৃষ্টি করে দুই নারীকে মারধর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওড়না নিয়ে এক ছাত্রীকে হেনস্তা, মাগুরার শিশু ধর্ষণসহ নারী নির্যাতনের ঘটনা উল্লেখ করে নারীর নিরাপত্তাহীনতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, পোশাক, ধূমপান হচ্ছে উসিলা। অনেক বড় শক্তিশালী একটি গোষ্ঠী আছে, যারা নারীদের স্বাধীনতা, সক্রিয় উপস্থিতি সহ্য করতে পারে না। তারা চায় নারী নির্জীব ও অধীনস্থ থাকবে। নারী সংহতির সভাপতি শ্যামলী শীল বলেন, সংঘবদ্ধ নারীবিদ্বেষী তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। ব্যক্তিগত নিপীড়ন থেকে ঘটনার শুরু হচ্ছে। নারী যখন প্রতিবাদ করছে, তখন তার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ চক্র জুটে যাচ্ছে। যেভাবে নিপীড়ন ও হয়রানি করা হচ্ছে, তা রীতিমতো ভীতিকর। এ ধরনের পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়।