পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে সামরিক বাহিনীর একটি গাড়িবহরে ওত পেতে থাকা জঙ্গিদের হামলায় ১২ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। গতকাল আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী সাউথ ওয়াজিরিস্তানের পাহাড়ি বদর এলাকায় সেনাবাহিনীর গাড়িবহর জঙ্গিদের গুলির মুখে পড়ে বলে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। ‘পাল্টাপাল্টি গোলাগুলিতে’ ১২ সেনা ও ১৩ জঙ্গি নিহত হয়েছে, বিবৃতিতে বলেছে পাকিস্তানি বাহিনী। এ ছাড়া অন্তত চারজন আহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পাকিস্তানি তালেবান এ হামলার দায় স্বীকার করে বলেছে, সেনাদের কাছ থেকে তারা বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও ড্রোনও হাতিয়ে নিয়েছে। বাসিন্দারা বলছেন, ভোরের ওই হামলার পর হতাহতদের হাসপাতালে নিতে ও হামলাকারীদের খুঁজতে আকাশে তারা কয়েক ঘণ্টা ধরে একাধিক হেলিকপ্টার দেখতে পেয়েছেন। জঙ্গিদের হামলার আশঙ্কায় সাধারণত ওই এলাকায় সামরিক গাড়িবহর যাতায়াতের সময় কারফিউ দেওয়া হয় ও পথগুলো আগেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রাখা হয়। তার মধ্যে এ হামলা কীভাবে হলো তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরেই বলছে, ভারতের সহায়তায় আফগান তালেবানরাই পাকিস্তান তালেবানকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। নয়াদিল্লি ও কাবুল দুই পক্ষই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করার পর থেকে পাকিস্তানেও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর তালেবানের এ অংশের হামলা বেড়ে গেছে। -ডন, জিও নিউজ
‘পাকিস্তান আশা করছে, অস্থায়ী আফগান সরকার তার দায়িত্ব পালন করবে এবং আফগান মাটিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যক্রমে ব্যবহার হতে দেবে না,’ বলেছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী।
এদিকে পাকিস্তানের সরকার সোশ্যাল মিডিয়ায় চলমান রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছে। এ অভিযানে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনসিসিআইএ)। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সারা দেশে ৩৫৬টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৭৮৯টি তদন্ত চলছে। সেনাবাহিনীবিরোধী পোস্টে ৫২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী অনলাইন কার্যকলাপ ঠেকাতে বিভিন্ন যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি) গঠন করা হয়েছে। এনসিসিআইএ ও পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন কর্তৃপক্ষ (পিটিএ) যৌথভাবে কাজ করছে, যাতে উসকানিমূলক কনটেন্ট দ্রুত সরানো এবং সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা যায়। এনসিসিআইএর ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিট সার্বক্ষণিকভাবে অনলাইনে নজরদারি চালাচ্ছে, যাতে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা ছড়ানোর আগেই তা শনাক্ত করা যায়। সরকার জানিয়েছে, এসব পদক্ষেপ জাতীয় নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষায় জরুরি। কারণ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সমন্বিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা এখন বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। -ডন, জিও নিউজ