চার বছর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাক্ষাৎ পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছিল সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্য। সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে যুবরাজের নাম আসার পর সৌদি আরবকে ‘একঘরে’ করে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন বাইডেন।
কিন্তু মঙ্গলবার রিয়াদে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে সেই যুবরাজ মোহাম্মদকেই প্রশংসায় ভাসিয়ে দিয়েছেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বড় বিদেশ সফরে সৌদি সফর করেন। সৌদি যুবরাজকে ‘অসাধারণ মানুষ’ এবং ‘চমৎকার ব্যক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেন ট্রাম্প। সৌদি আরবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসঙ্গ একবারও তিনি তোলেননি।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাকে খুব পছন্দ করি, হয়তো খুব বেশিই পছন্দ করি।’ তার এ কথার সময় ক্যামেরার ফ্ল্যাশ ঝলসে ওঠে, শ্রোতারা করতালিতে ফেটে পড়েন। সালমানের সঙ্গে ট্রাম্পের এমন সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক তার প্রথম মেয়াদের কথাই মনে করিয়ে দেয়, যখন পারস্পরিক প্রশংসা ও চুক্তির ভিত্তিতে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। রয়টার্স লিখেছে, এ সম্পর্ক এখনো অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতেই গড়া। ট্রাম্প চাইছেন বড় অর্থনৈতিক চুক্তি এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় ভূমিকা ফিরিয়ে আনতে। অন্যদিকে সালমান চাইছেন আধুনিক প্রযুক্তি, সামরিক সহায়তা। সৌদি আরবকে আধুনিক ও আঞ্চলিক নেতৃত্বে নিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে শক্তিশালী মিত্র হিসেবে পাশে পেতে চাইছেন তিনি। এ সম্মেলনেই ট্রাম্প ১৪২ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতে ছড়িয়ে থাকা ৬০০ বিলিয়ন ডলারের সৌদি বিনিয়োগ প্যাকেজের কথা বলেন। তবে সৌদি আরবের সঙ্গে এত মাখামাখির সমালোচনা করেছেন মার্কিন আইনপ্রণেতা, মানবাধিকার কর্মী ও পররাষ্ট্র বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ট্রাম্প অর্থনৈতিক স্বার্থকে মানবাধিকারের ওপরে স্থান দিয়েছেন। সালমান যদিও সাংবাদিক খাশুগজি হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন এবং নারীর অধিকার সম্প্রসারণের মতো সংস্কারকে অগ্রগতির নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন চালিয়ে যাওয়ায় সেই সংস্কারের গ্রহণযোগ্যতা খর্ব হয়েছে। ট্রাম্পের সঙ্গে যুবরাজের সম্পর্ক আগের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের তুলনায় অনেক উষ্ণ। তবে বাইডেনের সম্পর্কও সময়ের সঙ্গে বদলেছে। -রয়টার্স