আজ ১৮ এপ্রিল ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী দিবস। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ভয়ানক ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের স্মৃতিবাহী দিন। স্বাধীনতার ৫৪ বছরের ইতিহাসে এক জঘন্যতম অধ্যায়। আজ থেকে ২৪ বছর আগে ২০০১ সালের এই দিনে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছিল বাংলাদেশে। ওইদিন উভয় পক্ষের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মাঝে গুলিবিনিময়ে তিনজন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) জওয়ান ও ১৬ জন বিএসএফ সদস্য নিহত হন। বিডিআর জওয়ানদের হাতে আটক হন দুজন বিএসএফ সদস্য। এ সময় গুলিবিদ্ধ ও আহত হন ছয়জন বেসামরিক বাংলাদেশি। এ ছাড়া বিএসএফের মর্টার শেল ও আগুনে বড়াইবাড়ী ছিটমলে ১৭৯টি বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
বড়াইবাড়ী দিবসের ২৪তম বর্ষপূতি উপলক্ষে রৌমারীর বড়াইবাড়ী বিওপিসংলগ্ন স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধানিবেদনসহ আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জানা যায়, ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল গভীর রাতে বিএসএফ সব আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে ১০৬৬ নম্বর সীমানা পিলার অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। তারা বড়াইবাড়ী বিডিআর ক্যাম্প দখল করতে চেয়েছিল। কিন্তু রাতের আঁধারে রাস্তা ভুলে গিয়ে বা ইচ্ছা করে সেখানকার ইরি-বোরো ধান খেত দিয়ে প্রবেশ করে। স্থানীয়দের মাধ্যমে বিডিআর জওয়ানরা খবর পেয়ে বিএসএফ সদস্যদের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ লড়াইয়ে যুক্ত হয় সেখানকার স্থানীয় জনগণও। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর গ্রামবাসীর সহায়তায় বিডিআর সদস্যরা তাদের প্রতিহত করতে সক্ষম হন। বড়াইবাড়ী ক্যাম্পের অকুতোভয় বিডিআর জওয়ানরা বড়াইবাড়ী দখলে নেওয়ার বিএসএফ জওয়ানদের অপচেষ্টা প্রতিহত করেন। প্রতি বছর এ দিনটি ‘বড়াইবাড়ী দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন স্থানীয় মানুষজন।
রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী সীমান্তে সংঘটিত সেই ঐতিহাসিক ঘটনার ২৪তম বর্ষপূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বড়াইবাড়ী দিবস উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন জানান, দিবসটি উপলক্ষে আগামীকাল (আজ) সকালে বড়াইবাড়ী বিওপিসংলগ্ন স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। সকাল ১০টায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হবে। এতে শহীদ পরিবারের স্বজনসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসী অংশ নেবেন।