প্রস্তাবিত দাম বাস্তবায়ন করতে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হলে দেশে শিল্পকারখানা থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা। তারা বলেন, ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশে নতুন কারখানা হবে না।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘পলিসি কনসিডারেশন ফর এনার্জি এফরডিবিলিটি অ্যান্ড ইম্প্যাক্ট অন ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পিটিটিভনেস শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। ইআরএফ ও পলিসি এক্সচেঞ্জের যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা, মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসরুর রিয়াজ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেছেন, গত ১৫ বছরের নতুন কূপ খননের জন্য তেমন কিছুই খরচ হয়নি, তৈরি হয়নি নতুন কোনো নীতিমালাও। যা দেশের গ্যাসসংকটের অন্যতম কারণ। এলএনজি আমদানির চেয়ে কম খরচে দেশে অনুসন্ধান করা সম্ভব ছিল। বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। এ অবস্থা চলতে থাকলে নতুন কারখানা এখানে আর হবে না। অনেক ব্যাংক দেউলিয়া, এনবিআরও সহযেগিতা করছে না। এ অবস্থায় অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ালে উদ্যোক্তারা কেউ বিনিয়োগ করবে না। বিদ্যমান বিনিয়োগও সম্প্রসারণ হবে না। সার্বিকভাবে দেশে শিল্প থাকবে না। পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসরুর রিয়াজ বলেন, গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করলে আমদানিনির্ভরতা বাড়বে, চাপে পড়বে অর্থনীতি। এখনকার চ্যালেঞ্জিং সময়ে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হলে উৎপাদনমুখী খাতে পণ্য উৎপাদনের ব্যয় বাড়বে। কমবে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা। নতুন বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একই সঙ্গে সিমেন্ট, ইস্পাত ও সিরামিক খাতে নতুন করে আমদানিনির্ভরতা বাড়বে। ফলে আর্থিক খাতে চাপ পড়বে। আমদানি বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রা বেশি লাগবে। মাসরুর রিয়াজ বলেন, আবার গ্যাসের দাম বাড়লে অনেক শিল্প বন্ধ হবে, তখন মন্দ ঋণ বাড়বে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, সিস্টেম লস কমানোর পাশাপাশি শুল্ক-কর কমিয়ে গ্যাসের দাম কমানোর সুযোগ রয়েছে। তা না করে যদি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, তাহলে দেশে শিল্পই থাকবে না। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শিল্পায়নের জন্য গ্যাসের সংকট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন কোনো বিনিয়োগ বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগ না আসার সবচেয়ে বড় কারণ গ্যাসসংকট।