পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগে কানাডাকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, কানাডার একটি এলাকাকে ‘বেগম পাড়া’ বলা হয়, যেখানে দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের পরিবার বসবাস করছে।
গতকাল তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী আহমেদ হুসেনের সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি এ আহ্বান জানান। এ প্রসঙ্গে কানাডার মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দুর্নীতির অর্থ বা লুটপাট করা সরকারি টাকা কানাডায় রাখতে চাই না।’ ড. ইউনূস বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি, কারণ এটি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।’ বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশকে একটি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কানাডার সহায়তাও চান প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে ‘বিদেশি বিনিয়োগ প্রচার ও সুরক্ষা চুক্তি (ফিপা)’ নিয়ে চলমান প্রযুক্তিগত আলোচনার বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেন কানাডিয়ান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ফিপা স্বাক্ষরিত হলে কানাডার ব্যবসায়ীরা এতে উৎসাহিত হবেন এবং এটি তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুততর করার আহ্বান জানান।
জবাবে কানাডার মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা কিছুটা কমিয়েছি, তবে এটি বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে করা হয়নি। বৈধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের দরজা সবসময় খোলা।’
বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কানাডার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন কানাডার মন্ত্রী। এছাড়া বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কার্যক্রম, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
এসসিবি নির্বাহী প্রধানের সঙ্গে বৈঠক : হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের লুটের টাকা খুঁজে বের করতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (এসসিবি)’র সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল এসসিবির গ্লোবাল চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার বিল উইন্টার্স ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ আহ্বান জানান ।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ এবং এই দেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলো বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলে ধরার জন্যও এসসিবির গ্লোবাল সিইও’র সহায়তা চান। এছাড়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশ নিয়ে যে ব্যাপক বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শুরু হয়েছে তার বিরুদ্ধে কাজ করার জন্যও এসসিবির সহায়তা চান তিনি।
বাংলাদেশে এসসিবির ১২০ বছর উদযাপন করতে ঢাকায় আসা উইন্টার্স অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্ব এবং দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার যে অগ্রগতি করেছে তার প্রশংসা করেন।