জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেকে (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি বিভাগ করার অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে এবার প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছে 'এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ'।
বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গিয়ে সংগঠনের পক্ষে এনবিআরের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব শাব্বীর আহমদের কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন- কর পরিদর্শক মুতাসিম বিল্লাহ, রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল বসর, উপ কর কমিশনার শিহাবুল ইসলাম কুশল, অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা ও অতিরিক্ত কমিশনার (কাস্টমস) হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
সরকার গত ১২ মে এনবিআরকে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করে। এর বিরোধিতা করে দেড় সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা।
অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, “দেশের উন্নয়নের অক্সিজেন, রাজস্ব আহরণের প্রাণভোমরা এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশটি ‘অত্যন্ত গোপনে’, ‘অতি দ্রুততার’ সঙ্গে এবং প্রত্যাশী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে অজ্ঞাত রেখে জারি করা হয়েছে।”
এর মধ্য দিয়ে একটি ‘নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা প্রভাবশালী মহলের স্বার্থকে অগ্রাধিকার’ দেওয়া হয়েছে বলে এতে তুলে ধরা হয়।
স্বারকলিপিতে লেখা হয়েছে, “অধ্যাদেশে জাতীয় স্বার্থকে ক্ষুন্ন করে নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা প্রভাবশালী মহলের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। অধ্যাদেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাংগঠনিক স্বাতন্ত্র্য ও পেশাগত স্বকীয়তাকে অস্বীকার করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রের অর্থনীতির মূল কাঠামো বিনষ্ট করে রাজস্ব আহরণের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
“কার্যক্রমটি বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামোর সাথেও সাংঘর্ষিক। পাশাপাশি রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অযাচিত হস্তক্ষেপের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় রাজস্ব ব্যবস্থাপনার সার্বিক কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
ঐক্য পরিষদের দাবি
১. জারি করা অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে;
২. অবিলম্বে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে;
৩. রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে;
৪. জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রস্তাবিত খসড়া এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনা করে প্রত্যাশী সংস্থাগুলো, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত