ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় নিখোঁজের দুইদিন পর মো. আমির হামজা ওরফে হানজালা (১৩) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চর চান্দড়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে আমির হামজার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল।
নিহত আমির হামজা আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের সায়েমউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে। সে একই উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চান্দড়া তালিমুল কুরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার জামাতখানা বিভাগের দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে চর চান্দড়া গ্রামের মতিয়ার শেখের স্ত্রী বাড়ির পাশের পুকুরে হাঁস আনতে গিয়ে পানিতে ভাসমান একটি বস্তা দেখতে পান। বস্তা থেকে দুর্গন্ধ আসায় স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে তারা আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যান। এ সময় পানিতে থাকা বস্তাটি থেকে হানজালার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটি অর্ধগলিত, মুখে আঘাতের চিহ্ন ও বস্তার ভেতর ইট পাওয়া গেছে। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতের বাবা সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস তার ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন।
পারিবারিক ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকেলে আমির হামজা মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও পরিবারের সদস্যরা তার সন্ধান পাননি। সোমবার সন্ধ্যায় আমির হামজার বাবা আলফাডাঙ্গা থানায় একটি জিডি করেন।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, আমার মাসুম বাচ্চাকে এমন নৃশংসভাবে কে হত্যা করল! আমার একটাই ছেলে হানজালা। আমি আমার ছেলের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
চান্দড়া নুরানি তালিমুল কুরআন মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মো. আমিনউল্লাহ বলেন, ছেলেটি খুব ভদ্র ও শান্ত ছিল। আমরা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই, দ্রুত তদন্ত করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হোক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ওসি মো. শাহজালাল আলম বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ চলছে। দ্রুতই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল