নেত্রকোনায় পানিতে ডুবে প্রতিনিয়ত ঘটছে মৃত্যুর ঘটনা। তারমধ্যে শিশু মৃত্যুর সংখ্যাই বেশি। আর এসকল মৃত্যুর জন্য অসচেতনতাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। জেলার গ্রাম পর্যায়ে প্রতিবছর অসংখ্য শিশু মারা যায় পানিতে ডুবে। শুধু মাত্র হাসপাতলের হিসেবেই গত ৬ মাসে ৫০ জন পানিতে ডুবে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলসহ প্রায় সবকটি উপজেলাতেই সারাবছর কমবেশি অসংখ্য শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়।
এর মধ্যে মৃত্যুঝুঁকি বেশি কলমাকন্দায়। সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হিসেবে অনুযায়ী জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত মোট ৫০ জনের তথ্য দিয়েছে জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়। এদিকে বেশিরভাগই পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনায় হাসপাতালে যান না মামলাসহ ময়নাতদন্তের ভয়ে। ফলে সেগুলো সরকারী হিসেবে আসে না। তবে পানিতে ডুবে মৃত্যুর মধ্যে শিশুই বেশি।
জেলা সিভিল সার্জন তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত পানিতে ডুবে মৃত্যু ৫০ জনের মধ্যে পূর্বধলায় ১০ জন, দুর্গাপুরে ২, কলমাকান্দায় ৭, বারহাট্টায় ৬, মোহনগঞ্জে ৮, খালিয়াজুরী ৩, মদনে ১, আটপাড়া ১ কেন্দুয়া ২ ও সদরে ১০ জন। এসকল ঘটনা চলতি বছরের শুধু জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত।
এদিকে ১২ সেপ্টেম্বর জেলার খালিয়াজুরী ধনু নদীতে ৩ শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর কেন্দুয়ার মাসকা গ্রামে এক শিশু পুকুরে ডুবে মারা যায়। গত ৯ আগস্ট আটপাড়ায় বাড়ির সামনে পুকুরে ডুবে ৩ বছরের শিশু ২৬ আগস্ট কলমাকান্দায় দেড় বছরের শিশুর মুত্যুসহ শুধু মাত্র জুলাই আগস্টেই ৯ জনের খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত মৃত্যুর সংখ্যা গত একমাসে ১৫ জনের মতো। তারপরও প্রতিরোধে নেই তেমন সচেতনতা।
কলমাকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডাক্তার আল মামুন জানান, গত জুলাই মাসে উপজেলায় ৪ জন শিশু আগস্টে ২ জন পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনায় নিয়ে আসেন স্বজনরা। হাসপাতালে যেসকল রোগী আসে সেগুলো আমাদের রেকর্ডে থাকে।
তিনি বলেন, পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর মধ্যে বেশির ভাগ দেড় থেকে ৫ বছর বয়সের। ঘটনাগুলোও সকাল ১১ টা থেকে দুপুরের মধ্যে বেশি ঘটে। অভিভাবকরা যখন পারিবারিক কাজে ব্যস্ত থাকেন তখন ঘটে দুর্ঘটনাগুলো। তাই সকলেকে সচেতন হওয়া বেশি জরুরী বলে তিনি মনে করেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল