টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ঘুষ, দুর্নীতি, অফিসে উপস্থিত থাকেন না কর্মচারী-কর্মকর্তারা। তবুও সঠিক সময় বেতন ভাতাসহ গ্রহণ করেন অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। অনেকে ব্যক্তিগত কাজেও ব্যবহার করেন অফিসের সরকারি গাড়ি। রয়েছে এমন নানা অভিযোগ। অভিযোগের ভিত্তিতে হঠাৎ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের কার্যালয়ে অভিযানে আসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের কার্যালয়ে হঠাৎ হাজির রাঙামাটির দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহিদ কালামের নেতৃত্বে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ফরহাদ হোসেন, উপ-সহকারী পরিচালক মো. বোরহান উদ্দিন, মো. সারোয়ার হোসেন ও সহকারী পরিদর্শক মো. আবু ছাদেক। তখন পুরো জেলা পরিষদ ছিল শুনসান নীরবতা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন না রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তবুও থেমে ছিল না দুদকের অভিযান। রাঙামাটির পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য প্রতুল দেওয়ান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনোতোষ চাকমার কাছে রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং কাজের ফাইল তলব করেন। এসময় পার্বত্য জেলা পরিষদের কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপস্থিতির হাজিরা খাতায় ছিল না অধিকাংশ কর্মকর্তা ও কর্মচারী স্বাক্ষর। এক-তৃতীয়াংশ ছিল ফাঁকা। অনুপস্থিত হয়ে মাস শেষে সরকারি বেতন ভাতা ভোগ করার প্রমাণ পায় দুদক সরেজমিনে। এবং যারা দেরিতে অফিসে উপস্থিত হয়েছিল তাদেরকে কৈফিয়ত তলব করা হয়।
পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময় রাঙামাটি দুদক উপ-পরিচালক মো. জাহিদ কালাম বলেন, হেড অফিসের নির্দেশেনা মোতাবেক আমরা এ অভিযান পরিচালনা করি। টেন্ডারবাজি, ঘুষ গ্রহণ, ঠিকাদারের বিল আটকে রেখে চাঁদা আদায় এবং কার্যালয়ে অনুপস্থিতিসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা এখানে এসেছি। এখানে এসে কিছু কিছু প্রমাণ মিলেছে। অফিসে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী অনুপস্থিত। আরও নানা অভিযোগ আছে সেগুলি যাচাই করা হচ্ছে। অনুসন্ধান চলছে।
অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর তৎকালিন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী স্বেচ্ছায় পরিষদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। এরপর ফ্যাসিসদের আমলে নিয়োগকৃত আর কোন কর্মকর্তা কর্মচারীকে অপসারণ কিংবা তাদের দুর্নীতি সর্মকে কোনো তদন্তও হয়নি। সে সময় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদকে বৈষম্য মুক্ত ঘোষণা করে নতুন চেয়ারম্যানসহ নতুন সদস্যদের নিয়ে পরিষদ গঠন হয়। কিন্তু তবুও দুর্নীতির কালো রঙ মুছে যায়নি পার্বত্য জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে। নতুন পরিষদের নতুন নতুন দুর্নীতির খবরও ছড়িয়ে পরে রাঙামাটি জেলা জুড়ে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম