ঝিনাইদহে শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতাসহ নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিলেও তাতে কোন কাজ হয়নি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক শিক্ষা বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমল ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ঝিনাইদহ জেলা বিটিএ (অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ গ্রুপ) সভাপতি হয়ে যান সদর উপজেলার কুলফাডাঙা (এমকে) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মহি উদ্দীন। এরপর থেকে বেশিরভাগ সময় তিনি অফিসিয়াল মিটিংয়ের নামে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে ফাঁকি দিয়ে গেছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দু’একটি ক্লাস নেওয়া কথা থাকলে তিনি তা তোয়াক্কা করেননি। তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (জীব বিজ্ঞান) আসাদুজ্জামান বিপ্লব প্রতিবাদ করলে তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। তাকে চাকরীচ্যুতসহ নতুন ষড়যন্ত্র এবং প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ার পর বাধ্য হয়ে ওই শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ সদর থানায় জিডি (নং-১০০৮) করেন। এ ঘটনার পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর গত ১৮ মে জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট অভিযোগের বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। কিন্তু শিক্ষক নেতা হওয়ায় মহিউদ্দীনের সাথে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মোঃ কামরুজ্জামান সখ্যতা ছিল। যার কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন বিদ্যালয়ের নামের ১৫ শতক জমি বিধি বহির্ভূতভাবে ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর কুলফাডাঙা গ্রামের আলী হোসেনের নিকট থেকে বিক্রির ৬ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা বায়নাপত্রের মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে ২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংটা অন্যের জমিতে করা যা এখনো রেজিস্ট্রি হয়নি। মালিক পক্ষের পরিবারের একজন সদস্যের চাকরি দেবার আশ্বাসে এবং ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে ওই জমিতে নতুন বিল্ডিং করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিদ্যালয়ের সাইকেল স্ট্যান্ডের নামে বরাদ্দকৃত ৫০ হাজার টাকা পুরোটাই আত্মসাৎ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের মাটি ভরাটের টাকাসহ বিভিন্ন অনুদানের বাজেট এবং আয়-ব্যায়ের হিসাবেও গড়মিল করেন। এ ছাড়া কথিত আছে মহি উদ্দীনের নিয়োগ প্রক্রিয়া ছিলো সম্পূর্ণ অযোগ্যতায় ভিত্তিতে। বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ পরিপত্রের আলোকে মাদ্রাসা সুপার থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হবার কোনো সুযোগ নেই। মহি উদ্দীনের নিয়োগ ছিলো তৎকালীন নিয়োগ বোর্ড, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ক্ষমতা দাপট ও অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে ফেলেন। এরপর তিনি প্রধান শিক্ষকের পদ বাগিয়ে নেন।
এ ব্যাপারে শিক্ষক নেতা মহিউদ্দীন বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। একজন শিক্ষককে বাড়তি সুবিধা না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে।
এঘটনায় জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, শিক্ষক নেতা মহিউদ্দীনের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ রয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল