নিখোঁজের ৩ দিন পর নৈশ প্রহরী গৌতম গাইনের (৩৫) হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কংশুর এলাকার মধুমতি বিলরুট চ্যানেল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গৌতম গাইন মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের কলিগ্রামের বিমল গাইনের ছেলে। তিনি ওই উপজেলার জলিরপাড় জে কে এম বি মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী পদে কর্মরত ছিলেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মোল্যা আফজাল হোসেন জানান, গত বুধবার (০৯ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টায় গৌতম গাইন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্ত্রী মিলি বৈরাগী মুকসুদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। শুক্রবার বিকেলে স্থানীয়রা মধুমতি বিলরুট চ্যানেলে মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, মরদেহের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্তারিত জানতে মরদেহ গোপালগঞ্জ আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী মিলি বৈরাগী অভিযোগ করে বলেন, দেড় মাস আগে ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ষড়যন্ত্র করে স্কুলের গ্রিল কেটে চুরির অপবাদ দিয়ে আমার স্বামীর কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। তারা তাদের মনোনীত একজনকে নৈশ প্রহরীর চাকরি দিতে চেয়েছিল। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক আমার স্বামীকে চাকরিতে বহাল রাখেন। এরপর থেকে চারজন শিক্ষক আমার স্বামীর বিরুদ্ধে সব সময় বিরোধিতা করে আসছিলেন। যে রাতে সে নিখোঁজ হয়, তখন রাত সাড়ে ৮টায় ডিউটিতে যায়। পরে তার মোবাইল বন্ধ পাই।
তিনি আরও বলেন, পরের দিন থানায় জিডি করি। শুক্রবার বিকেলে খবর পেয়ে গিয়ে স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করি। আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের কাজের দায়িত্বে থাকা মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, বুধবার সাড়ে ৮টার দিকে গৌতম আমাদের কক্ষে আসে। কিছুক্ষণ থেকে চলে যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ডাকাডাকি করি, সাড়া না পেয়ে গেটে তালা বন্ধ দেখি। ভাবলাম সে পাশেই আছে। সকালে তার স্ত্রী খোঁজ করতে এলে নিখোঁজের খবর জানতে পারি।
এ বিষয়ে সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গৌতম গাইনের মোবাইল কললিস্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কললিস্ট পেলে কল লিস্টের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু হবে। দ্রুত এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/এএ