একদিকে নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে তোলা হচ্ছে বালু। অন্যদিকে সে বালু দিয়েই ভরাট হচ্ছে নদীর তীর। সেখানে নির্মাণ করা হবে অবৈধ স্থাপনা। এমন চিত্র কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম বাজার সংলগ্ন কালিগঙ্গা নদীতে। গত রবিবার থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে নদীর অংশ ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন ও সাইদুল ইসলাম এবং যুবদল নেতা ইমরান হোসেন বিরুদ্ধে।
সোমবার (২ জুন) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, কুসলিবাসা-বাঁশগ্রাম সড়ক ঘেঁষে কালীগঙ্গা নদী। বাঁশগ্রাম বাজার সংলগ্ন এলাকা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। নদীতে বাঁধ দিয়ে সেই বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে তীরের প্রায় আট শতাংশ জমি।
এ সময় ড্রেজার ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম বলেন, আরিফ, ইমরানরা বালু তুলে ভরাট করছেন গত রবিবার থেকে। প্রশাসনের ভয়ে রাতে তোলা হচ্ছে বালু। তার ভাষ্য, প্রতি ঘনফুট বালু ৩ টাকা দরে প্রায় সাত হাজার ফুট বালু তোলা হয়েছে। আরও কয়েকদিন চলবে বালু তোলার কাজ।
জানা গেছে, স্থানীয় কৃষক সরোয়ারের কাছ থেকে সড়কের ধারের প্রায় পাঁচ শতাংশ জমি ইজারা নিয়েছেন বাজারের আরিফ ট্রেডার্সের মালিক আরিফ হোসেন। ইজারাকৃত পাঁচ শতাংশসহ প্রায় ১৩ শতাংশ জমিতে বাঁধ দিয়ে বালু ফেলছেন ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম। তিনি নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে প্রতি ফিট তিন টাকা দরে বালু তুলছেন। আর এ সব কাজ দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন বাগুলাট ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের পদ দাবিকারী ইমরান হোসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, সাইদুল প্রায়ই ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু তোলে নদীর তীর ভরাট করে দিয়ে টাকা নিচ্ছেন। এতে হুমকিতে পড়েছে নদী, জীব ও বৈচিত্র্য। জমি দখলের ফলে সরকারি সম্পত্তি কমে যাচ্ছে। বাঁশগ্রাম বাজার এলাকায় প্রায় আট শতাংশ সরকারি জমি ভরাট করা হচ্ছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা। বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
অভিযোগ অস্বীকার করে জমির ইজারাদার আরিফ হোসেন বলেন, সরোয়ারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বালু ভরাটের পর আয়তন অনুয়ায়ী টাকা পরিশোধ করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লেনদেন হয়নি।
বালু তোলার কথা স্বীকার করেছেন যুবদল নেতা দাবী করা ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, ভরাট করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করা হবে। এ সব নিয়ে রিপোর্ট টিপোর্ট করার দরকার নাই।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে কারা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, খুব দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ