নেত্রকোনায় ৮ বছরের নিজ সন্তানকে হত্যার দায়ে এরশাদ মিয়াকে (৩৬) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
বুধবার বিকালে জনাকীর্ণ আদালতে আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন জেলা ও দায়রা জজ হাফিজুর রহমান। মোট ১৬ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তকে যাবজ্জীবন তৎসহ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত এরশাদ মিয়া সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের (মোড়ল পাড়া) আব্দুল জব্বার মুন্সির ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, এরশাদ মিয়ার সঙ্গে ময়মনসিংহের গৌরিপু্রের সাততী গ্রামের মতিউর রহমানের মেয়ে আফরোজা আক্তারের বিয়ে হয় ঘটনার ১০ বছর আগে। তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি ছেলে সন্তান হয়। দ্বিতীয় সন্তান জন্মের পরপরই মারা যায়। কিন্তু পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী-স্ত্রী আলাদা হয়ে পড়েন। স্বামী-স্ত্রীর খোঁজ-খবর নিতো না। পরে আফরোজা আক্তারের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন আরাফকে নিয়ে কান্দুলিয়া এলাকায় মামার বাড়িতে সেলাই মেশিনের কাজ করে জীবন চালাতেন।
ক্ষোভে গত ২০২০ সনের ১০ নভেম্বর স্বামীকে তালাক দেন। এরশাদ তালাকপ্রাপ্ত হয়ে গত ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি স্বপ্ননীড় গার্মেন্টসে কাজ করার সময় এরশাদ ওই বাড়িতে গিয়ে দরজা আটকিয়ে ছেলেকে হত্যা করে। সেইসাথে নিজেও গলায় ফাঁসি লাগিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। প্রতিবেশিরা টের পেয়ে দরজা খুলতে অনুরোধ করে। না খোলায় পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে এরশাদকে আটক করে এবং ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর স্ত্রী বাদী হয়ে মডেল থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৫ এপ্রিল চূড়ান্ত চার্জশিট দাখিল করলে আদালত সকল স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় দেন।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত