কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন প্রায় দুই বছর আগে মারা গেছেন। তবে তাকে সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে জেলাজুড়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়।
মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল ৫৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তার হার্টের সমস্যা ছিল। গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭ জনকে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি/পদায়ন করা হয়। ওই তালিকায় তিনি ১৩ নম্বরে রয়েছেন।
তালিকায় দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনকে অধ্যাপক পদ থেকে মাউশি অধিদপ্তর কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ.টি.এম শওকত আকবর বলেন, 'গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর কলেজ অধ্যক্ষ আ ন ম আজিজুর রহমান অবসরে যাওয়ার পর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। মাউশি থেকে এখন এখানে অধ্যক্ষ নিয়োগ হলে আমি পূর্বের পদে বহাল থাকব। মৃত ব্যক্তির পদায়নের বিষয়টি আমার জানা নেই।'
এ বিষয়ে জানতে সদ্য পদায়ন পাওয়া সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার স্ত্রী তাহমিনা শবনম বলেন, '২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী বাহিনীর রাম দার কোপে আমার স্বামী বাম হাত ও পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলে। এছাড়া তিনি হার্টের রোগী ছিলেন। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল মারা যান। ২০২৩ সালের মে মাসের দিকে সরকারি গোয়েন্দা শাখার লোকজন আমার কাছে তার পদায়নের বিষয়ে যোগাযোগ করলে আমি তাদের জানিয়েছিলাম যে আমার স্বামী মারা গেছেন। এছাড়াও আমি আমার স্বামীর পেনশনের টাকাও উত্তোলন করেছি। এতো দিন পর মাউশি তাকে পদায়ন করল। পদায়ন হলে তার অনেক আগেই হওয়ার কথা ছিল।'
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলমের মুঠোফোনে কল করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন