ইঞ্জিন সংকটে ট্রেন কমায় ও জনবল সংকটে স্টেশন বন্ধের পর লাকসাম-নোয়াখালী রেলরুট এখন মৃতপ্রায়। ওই রুটে ট্রেন কমায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় যাত্রীরা। তাদের বেশি ভাড়ায় সড়কপথে চলাচল করতে হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যবসাবাণিজ্য কমে যাওয়ায় স্টেশনসংলগ্ন ব্যবসায়ীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লার লাকসাম থেকে নোয়াখালী রেল রুটে আগে দুই জোড়া ডেমু কমিউটার, দুই জোড়া লোকাল ট্রেন ও দুটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করত। এখন শুধু আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেস চালু আছে। এ ছাড়া সপ্তাহে তিন দিন একটি লোকাল ট্রেন চলাচল করত। ইঞ্জিন স্বল্পতায় তাও মাঝে মাঝে যাত্রা বাতিল হয়। ওই রেললাইনে লাকড়ি ও কাঁথা শুকান স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়া বন্ধ হয়ে গেছে এই রেল রুটের দৌলতগঞ্জ, খিলা, বিপুলাসার, বজরা ও মাইজদী রেলস্টেশন।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার খিলা রেলস্টেশন এলাকায় দেখা যায়- স্টেশনটি দেড় দশক ধরে বন্ধ রয়েছে। সেখানে প্ল্যাটফর্মে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মালামাল রেখেছেন। অন্য পাশে জুয়া খেলায় ব্যস্ত লোকজন। কোথাও গরু, ছাগল বাঁধা হয়। স্টাফ কোয়ার্টার ভেঙে পড়ে আছে। প্ল্যাটফর্মের দুই পাশে রেলওয়ে থেকে ভাড়া নেওয়া দুটি দোকান রয়েছে। তবে দোকান ক্রেতাশূন্য। লাকসামের তপৈয়া এলাকায় রেললাইনে কাঁথা শুকাতে দেখা গেছে। খিলা বাজারে স্থানীয় অহিদুল ইসলাম বলেন, এই স্টেশন এক সময় অনেক জমজমাট ছিল। এখন ট্রেন কমে গেছে। স্টেশনও বন্ধ। ট্রেন কমে যাওয়ায় আমাদের চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এই রুটের যাত্রী আবদুল ওয়াদুদ খোকন, আবদুল কাদের বলেন, আগে এই রুটে চার-পাঁচটি ট্রেন চলত। এখন একটি ট্রেন চলে। ট্রেনের পরিমাণ বাড়লে এলাকার মানুষ সাশ্রয়ী ভাড়ায় চলাচল করতে পারবে। ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, স্টেশনমাস্টার ও জনবল সংকটে স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। স্টেশনমাস্টার নিয়োগ হলে স্টেশনগুলো আবার চালু হবে। এদিকে ইঞ্জিন সংকটে ট্রেন কমেছে। আগামী মাসে এই রুটে নিঝুম এক্সপ্রেস নামের আরেকটি আন্তনগর ট্রেন চালু হতে পারে।