মাদারীপুর জেলার শিবচরে রেললাইন চালু হওয়ার দেড় বছরে ট্রেনে কাটা পড়ে কমপক্ষে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। কেউ ঘুরতে এসে, কেউ রেললাইন পার হতে গিয়ে আবার কেউ পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে মারা গেছেন। ট্রেনে কাটা পড়া লাশও উদ্ধার হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত শিবচরে পাঁচ্চর সংলগ্ন স্থানে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন ৯ জন। ভাঙ্গা এলাকায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর হতে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন ২৪ জনের বেশি মানুষ। এর মধ্যে ঘুরতে এসে ছবি তুলতে গিয়ে মারা গেছে ১০ জনের মতো। অন্যদের লাশ রেললাইন থেকে রাতে এবং ভোরে উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, ‘দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন বিকালে শিবচরের পাঁচ্চর এলাকার রেললাইনে ঘুরতে আসা মানুষের আড্ডা জমে। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই ভিড় থাকে। ঘুরতে এসেও ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায় অনেকেই। তবে অনেকেরই শঙ্কা, রেললাইনে হত্যার মতো ঘটনাও থাকতে পারে! জানা গেছে, ঢাকার কমলাপুর থেকে রাজশাহী, খুলনা পর্যন্ত ট্রেন চলে এ রুটে। এ এলাকায় রেললাইন নির্মাণের সময় থেকে সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয় রেলপথ। প্রতিদিন বিকালে স্থানীয়রা ঘুরতে বের হয় রেললাইনে। সন্ধ্যার পর ভিড় আরও বাড়ে। রেল চালুর পরও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।
পাঁচ্চর এলাকায় শিক্ষক মো. জলিল বলেন, বিকাল হলেই রেললাইনে মানুষের আড্ডা জমে। সকাল-দুপুরেও রেললাইন ধরে তরুণ-তরুণীদের হাঁটতে দেখা যায়। স্থানীয়রা ছাড়া অনেকেই ট্রেন চলাচলের সময় জানে না। দূর থেকে ট্রেন দেখে সরতে গিয়েও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। দেখলে মনে হয় ট্রেন ধীমের আসছে, কিন্তু উল্টো। প্রচ গতিতে ট্রেন চলে এখানে। তাই রেললাইনে যত্রতত্র ঘোরাঘুরি করা ঠিক না।
শিবচর রেললাইনে দায়িত্বরত রেল পুলিশের উপপরিদর্শক মো. সাফুর আহমেদ বলেন, আমরা দুর্ঘটনার পরই ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করি। বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে এখানে। এ এলাকায় রেললাইনে মানুষের ঘোরাঘুরি বেশি। সাধারণ মানুষের অবাধে রেললাইনে বিচরণ করা বন্ধ করতে হবে। স্থানীয়দের আরও সচেতন হতে হবে।
শিবচর স্টেশনের মাস্টার মো. সেলিম হোসেন বলেন, এই লাইনে ১ শত কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে রেল চলাচল করে। দুর্ঘটনা এড়াতে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত রেললাইনে হাঁটাহাঁটি বন্ধ করতে হবে। মানুষকে সচেতন হতে হবে।