খাগড়াছড়ি জেলা আধুনিক সদর হাসপাতাল। ২০২৪ সালে ১০০ শয্যার এ হাসপাতালটি ২৫০-এ উন্নীত করা হয়। এরপর বছর কেটে গেলেও ১০০ শয্যার লোকবল নিয়ে এখানে খুঁড়িয়ে চলছে চিকিৎসা র্কাযক্রম। কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পার্বত্য এ জেলার সাধারণ মানুষ। হাসপাতালের ৯ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের কার্যক্রমও চলছে ধীরগতিতে। শয্যার বেশি রোগী ভর্তি থাকায় অনেকে হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। জানা যায়, ২৫০ শয্যার অনুমোদন থাকলেও তা শুধু কাগজে-কলমে। পুরোনো ১০০ শয্যার ভবনেই কোনোমতে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। বর্তমানে চিকিৎসক-র্কমচারীসহ ১০৬টি পদ খালি। দীর্ঘদিন ফাঁকা খালি ছিল তত্ত্বাবধায়কের পদ। সম্প্রতি নতুন তত্ত্বাবধায়ক শামিম আহমেদ ঝালকাটি জেলা হাসপাতাল থেকে এসে যোগদান করেছেন। অভিযোগ আছে যোগদানের পর একদিন অফিস করে আর আসেননি তিনি।
আইসিইউ ওয়ার্ড আছে নামে মাত্র। অতি গুরুত্বপূর্ণ এ ওয়ার্ডে সরঞ্জাম থাকলেও নেই বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক। সিটি স্ক্যান মেশিন নেয়। এসবের প্রয়োজন হলে রোগীদের যেতে হয় বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতালে প্যারা মেডিকেল যেসব শিক্ষার্থী ডাক্তারদের সঙ্গে থেকে চিকিৎসাসেবার কাজ শিখছেন, তাদের দাপটে রোগীরা অসহায় হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ আছে। হাসপাতালে করোনাকালে বরাদ্দ পাওয়া আইসিইউ অ্যাম্বুল্যান্সটি জনবল না থাকায় দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।
একাধিক রোগী ও তাদের স্বজন জানান, প্যারা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণ দেখলে মনে হয় তারা হাসপাতালে নিয়োগ পাওয়া ডাক্তার। আবাসিক চিকিৎসক রিপেল বাপ্পি চাকমা জানান, ১৮ একর হাসপাতালের জমির মধ্যে দখলে আছে আট একর। বাকি ১০ একর এখনো অবৈধ দখলদারীদের হাতে। তিনি এসব উদ্ধারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। রিপেল বাপ্পি বলেন, প্যারা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। চিকিৎসক সংকট কাটাতে উপজেলাগুলো থেকে ১২ জন ডাক্তার ডেপুটিশনে আনা হয়েছে। শিশু, মেডিসিন ও গাইনি বিভাগে স্থায়ী পদে চিকিৎসক পদ বিভাজন না হওয়ায় এখানে ডেপুটিশনে চিকিৎসক এনে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। জানা যায়, হাসপাতালটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্কোরে ১৫তম ও চট্টগ্রাম বিভাগে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। পর্যাপ্ত লোকবল ও চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকলে আরও ভালো অবস্থানে যাবে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।