তীব্র গরমে ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ৫০ শয্যার এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগীসহ বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, সেখানে তীব্র দাবদাহে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট রোগী বেড়েছে। ১৫ দিন ধরে ৭০-৮০ জন রোগী ভর্তি থাকছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে। বেড না পেয়ে মেঝেতে থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নেন ৪০০-৪৫০ জন। জরুরি বিভাগে ৮০-১০০ জন চিকিৎসা নেন। হাসপাতালের রেকর্ড অনুসারে, ১৩ মে হাসপাতালে ৬০ জন ভর্তি ছিলেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, সেখানে ১৩ জন চিকিৎসকের স্থলে মাত্র দুজন কর্মরত রয়েছেন। রোগীদের সেবায় মাত্র একজন ওয়ার্ড বয় আছে; থাকার কথা তিনজন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স মাহফুজা খাতুন জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ৩-৪ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকে। কিন্তু গত কয়েক দিনে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ডায়ারিয়া আক্রান্ত ৮-১০ জন করে রোগী ভর্তি নিতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝেতে ভর্তি হয়ে থাকা রোগী হাসনা বেগম বলেন, দুই দিন আগে হঠাৎ ছেলের বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। হাসপাতালে ভর্তি করেছি। বেড না থাকায় মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ইলতুতমিশ আকন্দ জানান, তীব্র গরমে হাসপাতালে কিছুদিন ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তন ও তীব্র গরমের কারণে মা, শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়া রোগে ভুগছেন বলে মনে হচ্ছে। তবে এই হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন পর্যাপ্ত থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কনসাল্ট্যান্ট, সার্জন, মেডিকেল অফিসারসহ ১৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা। বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছেন দুজন। ফলে ভর্তি ও বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিছুদিন থেকে মাস্টার রোলে কিছু নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। চাহিদা মোতাবেক চিকিৎসক পেলে সেবার মান আরও বাড়বে। পর্যাপ্ত পরিমাণে বেড না থাকায় অনেক সময় রোগীরা মেঝেতে বেড করে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন।
দাবদাহের ব্যাপারে তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, এই গরমে ভাজা পোড়া খাবার কম খেতে হবে। খাবারের আগে সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে ধৌত করতে হবে এবং অবশিষ্ট খাবার ভালোভাবে ঢেকে রাখতে হবে। তীব্র গরমে বেশি পানি ও খাবার স্যালাইন খেতে হবে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে এসে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।