রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যেই একটি কাঠামোতে আসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, বড়জোর ৩১ জুলাই পর্যন্ত আমরা সময় নিতে পারি। গতকাল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার ১২তম দিনের সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চলমান সংলাপে গতি আনার তাগিদ দিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই আলোচনার দৃশমান অগ্রগতি হবে বলে আশাবাদী। কমিশন দ্রুততার সঙ্গে জাতীয় সনদ তৈরির দিকে এগিয়ে যেতে চায়। তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহে তিন দিন আলোচনা হবে। এর মধ্যেই কমিশন একটি যৌক্তিক অগ্রগতির জায়গায় পৌঁছাক, এটা আমরা চাই। আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা আপনাদের বক্তব্য গুরুত্বহীন মনে করছি না বরং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করি। কিন্তু কোথাও না কোথাও একটি জায়গায় এসে একমত হতে হবে। এর বিকল্প হতে পারে একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত, যেখানে সবকিছু একজন ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত থাকবে। সেটি গণতন্ত্রের জন্য সুখকর হবে না।’ রাষ্ট্রপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ার দিকেও ইঙ্গিত করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি নিয়োগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। ফলে রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি নিয়োগ পাচ্ছেন মাত্র দুই ব্যক্তির সম্মতির ভিত্তিতে। এটা একরকম রোমান মডেলের মতো যেখানে একজনের সিদ্ধান্তই সব।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে খানিকটা ছাড় দিয়ে এক জায়গায় আসার আহ্বান জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, সব বিষয়ে ১০০ শতাংশ আমাদের অবস্থান থাকবে, এই ধারণা নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। আমরা আপনাদের বলেছি, কিছুটা ছাড় দিয়ে, অবস্থান নমনীয় করে এক জায়গায় আসতে হবে।
না হলে আলোচনা অর্থহীন হয়ে যায়। সবাই তো নিজের অবস্থান থেকে কথা বলেই যাচ্ছেন, বলছেন সারা দিন, বলছেন সারা বছর। তাহলে সংলাপের অর্থ কী? কমিশন বলছে, আলোচনা বিলম্বিত হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক ও নির্বাচনের নানান কাজে বিলম্ব হবে সেটা কমিশন চায় না।
কমিশনের আলোচনা পর্বে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। বৈঠকে ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।