ভালুকের শরীরে পচন ধরার ঘটনায় ময়মনসিংহ মহানগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানাটি সিলগালা করা হয়েছে। গতকাল বিকালে পরিদর্শন শেষে সিলগালা করে ঢাকার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এ ছাড়া সেখান থেকে ৪৮টি দেশি বন্যপ্রাণী জব্দ করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘দেশি অথবা বিদেশি যেকোনো পশুপাখির জন্যই এখানকার পরিবেশ খুব অস্বাস্থ্যকর। এর পরও নিয়মবহির্ভূতভাবে ৪৮টি দেশি প্রাণী ছিল চিড়িয়াখানাটিতে। এর মধ্যে ২৭টি আমরা নিয়ে যাচ্ছি। বাকিগুলো চিকিৎসার জন্য এখানেই থাকবে। এখন থেকে আর চিড়িয়াখানাটিতে দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবে না।’ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান নার্গিস সুলতানা। তবে অতিরিক্ত দুর্বল থাকায় এ মুহূর্তে ভালুকটি নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানান বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য কর্মকর্তা রথীন্দ্র্র কুমার বিশ^াস। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক ভালুকটির নিয়মিত চিকিৎসা করবেন। যখন সুস্থ হবে তখন আমরা নিয়ে যাব।’
তিনি আরও জনান, জব্দ প্রাণীগুলোর মধ্যে কিছু প্রাণীকে গাজীপুরের সাফারি পার্কে রাখা হবে। বাকিগুলো অবমুক্ত করা হবে।
জয়নুল আবেদিন উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানাটিতে গিয়ে দেখা গেছে, খাঁচায় থাকা দুটি ভালুকের মধ্যে একটির শরীরে পচন ধরেছে। এমনকি প্রাণীটির পায়ের অংশবিশেষ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
কামাল হোসেন নামে চিড়িয়াখানার এক কর্মী জানান, ‘পচন ধরা অংশে নিজের পা নিজেই কামড়ে ছিঁড়ে ফেলেছে ভালুকটি। তারপর স্থানীয় প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ দিয়ে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। এর পরও ভালুকের পায়ের ক্ষত বাড়ছে।’
জানা যায়, ২০১৩ সালের দিকে জয়নুল আবেদিন উদ্যানের ভিতরে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মিনি চিড়িয়াখানাটি গড়ে তোলা হয়। হরিণ, ভালুক, কুমির, হনুমান, গাধা, অজগরসহ ২৪ প্রজাতির প্রাণী ছিল চিড়িয়াখানাটিতে। তবে মেছো বাঘের মৃত্যুর পর বর্তমানে সেখানে ২৩ প্রজাতির ১১৪টি প্রাণী আছে। ৩০ টাকায় টিকিট কেটে দর্শনার্থী চিড়িয়াখানাটিতে ঢুকতে পারেন। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের জায়গা ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে চিড়িয়াখানাটি।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. সিদ্দীকুর রহমান জানান, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, ২ নম্বর প্যানেল মেয়র মাহবুবুর রহমানের শ্যালকের নামে চিড়িয়াখানাটির জায়গা বরাদ্দ নেওয়া আছে। তৎকালীন পৌর মেয়র প্রয়াত অ্যাডভোকেট মাহমুদ আল নূর তারেক মিনি চিড়িয়াখানাটির অনুমতি দেন বলে জানান সেখানকার কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মামুন।