নতুন নামে নতুন রূপে সাজছে চট্টগ্রামের একমাত্র আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম। গত ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর চলতি বছরের ২৪ মার্চ জহুর আহমেদ স্টেডিয়াম নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়াম’। আন্তর্জাতিক এই স্টেডিয়ামটি আগে নানান সমস্যায় জর্জরিত থাকলেও এখন তা নেই। ফলে নতুন নামে নতুন সাজে দর্শক বরণে প্রস্তুত এ স্টেডিয়াম।
গত বছরের অক্টোবরে বিপিএল ম্যাচ হয়েছে এই স্টেডিয়ামে। ওই সময় স্টেডিয়ামের পিচে পানি দেওয়ার জন্য বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। কারণ প্রতিদিন আড়াই লাখ লিটার পানি প্রয়োজন হয় স্টেডিয়ামের জন্য। পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা না থাকায় রোজ পানি দেওয়া সম্ভব হতো না। কারণ চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে কোনো প্রকার পানি সহায়তা না থাকার ফলে আশপাশের পুকুর থেকেই পানি সংগ্রহ করতে হতো। সম্প্রতি এই সমস্যা সমাধান হয়েছে বলে জানিছেন ভেন্যু ম্যানেজার ফজলুর রহমান।
তিনি বলেন, আগে স্টেডিয়ামে পানি দিতে সমস্যায় পড়তে হতো। সম্প্রতি এর সমাধান হয়েছে। আপাতত আন্তর্জাতিক মানের এই স্টেডিয়ামে কোনো সমস্যা নেই। যে কোনো সময় যে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়াম প্রস্তুত।
গত বছর বিপিএলের আগে স্টেডিয়ামটিকে নতুন রূপে সাজাতে আমূল সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে ওই সময় সংস্কারের জন্য এই স্টেডিয়ামের জন্য ৭ কোটি ৪৮ লাখ ২৬ হাজার ৪৭৭ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই অর্থ দিয়ে স্টেডিয়ামের বিভিন্ন অংশে সংস্কার কাজ করা হয়েছে। তার মধ্যে প্যাভিলিয়ন এবং মিডিয়া ভবনের ছাদ সংস্কার, প্রেসিডেন্ট বক্স মেরামত, খেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুম সংস্কার, লিফট স্থাপন, পি এ সিস্টেম ও ট্রাইভিশন আধুনিকায়ন, গ্যালারি সংস্কার, সীমানাপ্রাচীরের উচ্চতা বৃদ্ধি, ফ্লাড লাইট সংস্কার ইত্যাদি কাজ এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত।
শুরুতে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিত ছিল এই মাঠ, পরে নাম পরিবর্তন করে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা জহুর আহমেদ চৌধুরীর নামে এই স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়। চট্টগ্রামের ক্রিকেটপ্রেমীরা এ মাঠকে বাংলাদেশের লাকি গ্রাউন্ড বলে মনে করেন। এই মাঠের দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ১৯ হাজার।
চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় আধা ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়ামটি ২০০৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম ছিল প্রধান ক্রিকেট ভেন্যু। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে ও টেস্ট ম্যাচ আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। মিরপুর শের-এ-বাংলা স্টেডিয়ামের পর প্রতি বছর এখানে সব থেকে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।