সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পক্ষ হতে একটি মামলা করা হয়েছে। এই মামলায় পুলিশ ইতোমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এদিকে, দুই দিন দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকার পর আজ শুক্রবার থেকে যথারীতি কাছারিবাড়ি খুলে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সম্পর্কে এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানায় মন্ত্রণালয়। কবিগুরুর কাছারিবাড়িতে হামলার ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক কোনো উদ্দেশ্য নেই বলে বিবৃতিতে উল্লেখ আছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি। প্রতিবছর কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত স্থানটি দর্শন করতে দেশ-বিদেশ হতে হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটে।
গত ৮ জুন শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির দায়িত্বরত কর্মচারী ও একজন দর্শনার্থীর মধ্যে পার্কিং টিকিট নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি এবং কথা কাটাকাটির জেরে হাতাহাতি ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ সময় শাহনেওয়াজ নামের একজন দর্শনার্থীকে মারধর করে আটকে রাখার অভিযোগও পাওয়া যায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে তদন্ত চলার মধ্যেই গত ১০ জুন দর্শনার্থী শাহনেওয়াজের পক্ষে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি মানববন্ধন করে। যেখান থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমান ও অন্যান্য দায়ী কর্মচারীদের শাস্তির দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন থেকে উত্তেজিত জনতা কাছারিবাড়িতে প্রবেশ করে মূলত কাছারিবাড়ির কর্মচারীদের মারধর করার উদ্দেশ্যে। সেই সময় রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী আহত হয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ঘটনার বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পক্ষ হতে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পক্ষ হতে একটি মামলা করা হয়েছে, যে মামলায় পুলিশ ইতোমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে কাছারিবাড়ির নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল থেকে যথারীতি প্রশাসন ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে কাছারিবাড়ি খুলে দেওয়া হয়েছে।
রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত কোনো নিদর্শন নষ্ট হয়নি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়য়েছে, এ আক্রমণের সাথে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের বাইরে কোনো সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। কবিগুরুর সম্মান বা মর্যাদাহানিকর কিছু ঘটেনি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত