প্রাকৃতিক মিষ্টতা, টকটকে স্বাদ আর অসাধারণ পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সহজলভ্য ফল—মালটা। সারা বছর বাজারে পাওয়া গেলেও শীত মৌসুমে এটি বেশি জনপ্রিয়। শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিমানে এবং স্বাস্থ্য উপকারিতায় মালটা এমন একটি ফল, যাকে পুষ্টিবিদরা 'সেরা ফল' বলতেই পছন্দ করেন।
রোগ প্রতিরোধ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শক্তি
একটি মাঝারি আকারের মালটা দিনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘সি’-এর ৯০ শতাংশের বেশি পূরণ করতে পারে। এই ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বককে রাখে উজ্জ্বল ও বলিরেখা প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস—ফ্ল্যাভোনয়েড, বিটা ক্যারোটিন ও লিমিনয়েড। এসব উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর। বিশেষ করে মুখ, ত্বক, স্তন, ফুসফুস ও পাকস্থলীর ক্যানসার প্রতিরোধে মালটার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কার্যকর
মালটার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ। এ ছাড়া এর ম্যাগনেসিয়ামও রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
হজম ও লিভার সুস্থতায় উপকারী
মালটায় থাকা ফাইবার হজমে সহায়তা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে এবং পাকস্থলীর আলসার প্রতিরোধে কাজ করে। এটি লিভারকে ঠান্ডা রাখে ও লিভারের কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। এমনকি জন্ডিস রোগীদের জন্য মালটা বিশেষ উপকারী বলে চিকিৎসকেরা মত দিয়েছেন।
গর্ভবতী ও প্রবীণদের জন্য দারুণ উপকারী
গর্ভবতী নারীদের জন্য মালটা খুবই উপযোগী। এতে থাকা ভিটামিন সি গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে। প্রবীণ ও দুগ্ধদানকারী নারীদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও মালটা সহায়ক।
ত্বক, দৃষ্টিশক্তি ও ওজন নিয়ন্ত্রণ
মালটা ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে এবং বলিরেখা কমায়। এতে থাকা ভিটামিন এ ও পটাশিয়াম দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবারের উপস্থিতি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
সহজলভ্য ও সহজপাচ্য
মালটা খুবই সহজপাচ্য একটি ফল। এটি দ্রুত হজম হয় এবং দেহকে সতেজ রাখে। প্রায় ৮০% পানি থাকায় গরমে শরীর ঠান্ডা রাখে এবং তৃষ্ণাও মেটায়।
বিডি প্রতিদিন/আশিক