কুষ্টিয়া শহরের একটি বহুতল ভবনের পার্কিং স্পেসে বিলাসবহুল ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়ির সন্ধান মিলেছে। কয়েক কোটি টাকা মূল্যের গাড়িটি গত বছর কলকাতায় হত্যাকাণ্ডের শিকার ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে। সোমবার স্থানীয়রা গাড়িটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ গাড়িটি উদ্ধার করে। গাড়ির ভিতরে গাড়ির কাগজপত্র, সংসদ সদস্য ও সিআইপি স্টিকার জব্দ করে পুলিশ। কালো রঙের গাড়িটার নম্বর ‘ঢাকা মেট্রো-ঘ ১২-৬০৬০’।
কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই স্বপন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, গাড়ির ভিতরে পাওয়া কাগজপত্র থেকে ধারণা করা হচ্ছে গাড়িটি সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের। মঙ্গলবার দুপুরে সাফিনা টাওয়ারের গ্যারেজ থেকে গাড়িটি উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মডেল থানার গ্যারেজে রাখা হয়েছে। গাড়িটি সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের বলে গণমাধ্যম কর্মীদের নিশ্চিত করেছেন আনার এমপির কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেন, উদ্ধার হওয়া গাড়িটির মালিক আমার বাবা আনোয়ারুল আজীম আনার। এই গাড়িতে করে আমিও আমার বাবা চলাফেরা করেছি। সাফিনা টাওয়ারের কেয়ারটেকার আলমগীর হোসেন জানান, জেনুইন লিফ কোম্পানি নামের একটি সিগারেট কোম্পানির জিএম বিল্লাল হোসেন প্রায় বছর খানেক আগে এই টাওয়ারের ২য়, ৩য় ও ৪র্থ তলা গ্যারেজসহ ৪১ হাজার টাকা মাসিক কন্টাক্টে ভাড়া নেন। পরবর্তীতে মাস তিনেক আগে এই টাওয়ারের আরও ৪টি ফ্লোর গ্যারেজসহ সাড়ে ৪৫ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। মাস তিন-চারেক আগে প্রাডো এই গাড়িটি কোম্পানির বলে জানিয়ে এই গ্যারেজে রেখে দেন বিল্লাল হোসেন। সূত্র জানায়, জেনুইন লিফ কোম্পানি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নতুন প্রসেসিং কারখানা করছে। কোম্পানিটির মালিক আবদুস সবুর লিটন। তার বাড়ি চট্টগ্রামে। নরসিংদী জেলায় ‘তারা টোব্যাকো’ নামে ব্যবসা পরিচালনা করেন। এ ছাড়া সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেল চৌধুরীর সঙ্গে ‘বিজয় টোব্যাকো’ নাম দিয়ে একসঙ্গে ব্যবসা করতেন ওই লিটন। ৫ আগস্টের আগে দৌলতপুর উপজেলায় তারা ও বিজয় টোব্যাকোর নামে তামাক ক্রয় করতেন লিটন। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গাড়িটি সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের। তবে গাড়িটির মালিকানা অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার গত বছরের ১৩ মে কলকাতার অদূরের বরাহনগর থেকে নিখোঁজ হন। ২২ মে কলকাতা সিআইডি দাবি করে আনার হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।