প্রায় দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরও হামাস তাদের সামরিক শক্তি অনেকাংশে ধরে রেখেছে। সেই সাথে প্রশাসনিক কাঠামোর একাংশও ধরে রেখেছে। সম্প্রতি বিবিসির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কীভাবে গোপন নগদ-ভিত্তিক পদ্ধতিতে হামাস এখনো তাদের প্রায় ৩০ হাজার কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করছে।
এ পর্যন্ত তিনজন সরকারি কর্মচারী বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন, তাঁরা সম্প্রতি প্রায় ৩০০ মার্কিন ডলার করে পেয়েছেন। যুদ্ধ-পূর্ব সময়ে তারা যে বেতন পেতেন, তার তুলনায় এটি একটি সামান্য অংশ। তবে তীব্র মুদ্রাস্ফীতি ও খাদ্য সংকটের কারণে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় গাজায় এই বেতন সংগ্রহ এক দুঃসাহসিক কাজ। প্রাপকরা সাধারণত একটি এনক্রিপ্টেড বার্তা পান নিজের বা স্ত্রীর মোবাইলে। যেখানে বলা হয়, নির্দিষ্ট সময়ে এক বন্ধুর সঙ্গে চা খেতে দেখা করতে। সেই ‘চা-সঙ্গী’ একজন পুরুষ বা নারী, যিনি চুপিসারে একটি খাম হাতে দিয়ে দ্রুত সরে যান।
হামাসের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিবার যখন বেতন আনতে যাই, স্ত্রীর সঙ্গে বিদায় জানিয়ে যাই, কারণ জানি ফেরত না-ও আসতে পারি। তিনি আরও জানান, ইসরায়েলি হামলায় একাধিক বেতন বিতরণ কেন্দ্র লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।
স্কুলশিক্ষক আলা (ছদ্মনাম) জানান, তিনি প্রায় ৩০০ ডলার সমপরিমাণ ক্ষয়িষ্ণু ও পুরনো কাগজের নোট পেয়েছেন। যার মধ্যে মাত্র ৬০ ডলার ব্যবহারযোগ্য ছিল।
ওই স্কুল শিক্ষক বলেন, দু'মাসেরও বেশি অনাহারের পর এমন ছেঁড়া টাকা হাতে পাই। অনেক দোকানদারই তা নিতে চায় না। খাদ্যের জন্য তিনি প্রায়ই ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে যান কিন্তু বেশিরভাগ সময় খালি হাতে ফিরতে হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার আগেই হামাস নেতৃত্ব প্রায় ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও বিপুল পরিমাণ শেকেল নগদ রূপে গোপন সুড়ঙ্গপথে মজুত করেছিল বলে দাবি করেন হামাসের এক উচ্চপদস্থ সাবেক কর্মকর্তা। এই কার্যক্রম সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতেন হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ও তাঁর ভাই মোহাম্মদ। যারা ইসরায়েলি অভিযানে নিহত হয়েছেন।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল