এখনো তফসিল ঘোষণা হয়নি। তবে নির্বাচনের মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে এখনই জমজমাট ভোটের মাঠ। আওয়ামী লীগ মাঠে থাকছে না ধরে নিয়েই প্রচারণায় নেমেছেন বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা। জামায়াত আগেই প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। দলটির নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এ আসনে প্রার্থী। তবে ক্লিন ইমেজের প্রার্থীর সন্ধানে বিএনপি। কারণ তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা এটাই চাইছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক, বিএনপিপন্থি আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহফুজুল হক মিলন, বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সালাম বিপ্লব, সাজেদুর রহমান খান মার্কনি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। তবে মনোনয়ন দৌড়ে নামা এই নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট হচ্ছে। এরই মধ্যে আধিপত্যের দ্বন্দ্বে তানোরে দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার নেতারা সবাই শরীফ উদ্দিন বিরোধী হিসেবে পরিচিত। সুলতানুল ইসলাম তারেক জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি তানোর-গোদাগাড়ীতে বিএনপির নির্যাতিত পরিবারগুলোর পাশে আছেন। জেলে থাকা নেতাদের পরিবারগুলোর পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। করোনাকালেও এলাকার মানুষের সহযোগিতায় থেকেছেন।
তানোর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শামসুল আলম জানান, ব্যারিস্টার আমিনুল হক এই আসনটির তিনবারের এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। তার ভাই হিসেবে মাঠে প্রচারণায় আছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। কিন্তু তিনি এলাকায় প্রচারণায় নামার পর থেকে দলকে বিভক্ত করে ফেলেছেন। এরই মধ্যে তার কর্মসূচি ঘিরে দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
এ ছাড়া সাজেদুর রহমান খান মার্কনি এবার আসনটিতে মনোনয়ন চান। বিএনপি এবার ক্লিন ইমেজের প্রার্থী মনোনয়ন দেবে, এমন প্রত্যাশায় আছেন তিনিও। মার্কনি জানান, দল এবার অনেক ভেবেচিন্তে প্রার্থী মনোনয়ন দেবে বলে তিনি আশাবাদী। ফলে এলাকায় গ্রুপিং করে, দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন- তাদের কপাল এবার পুড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।
গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বলেন, ক্লিন ইমেজের প্রার্থী ছাড়া এবার তানোর-গোদাগাড়ীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কঠিন হয়ে উঠবে। সম্প্রতি ব্যারিস্টার পরিবারের নাম ভাঙিয়ে তার ভাই যে রাজনীতি শুরু করেছেন, তাতে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শরীফ উদ্দিন মনোনয়ন পাওয়ার আগেই এলাকায় বিএনপিকে বিভক্ত করে ফেলেছেন। নানাভাবে বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। ফলে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেবে- এবার প্রার্থী কে হবেন।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন জানান, দলের কিছু নেতা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। কেন্দ্র বিষয়টি জানে। দলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মীরা তাকেই প্রার্থী হিসেবে চায় বলে দাবি তার।
এদিকে জামায়াত আগেই অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে দলের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ফলে তিনি দলীয় কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্র ও শনিবার এলাকার দুটি উপজেলায় করছেন গণসংযোগ। অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, এবার মানুষ জামায়াতকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। ১৯৮৬ সালে এই আসনটিতে এমপি হয়েছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, আসনটিতে এখনো এনসিপি বা অন্য কোনো দলের তৎপরতা নেই।