ছয় মাস আগে শিশু সোয়াইব হোসেনকে (৬) অপহরণ করে চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। সারা শরীরে সিগারেট আর কয়েলের ছ্যাঁকা দিয়ে হাতের নখ উপড়িয়ে, না খাইয়ে রাখা হয় তাকে। দীর্ঘদিন এভাবেই নির্যাতন করে অসুস্থ বানিয়ে করানো হতো ভিক্ষা। প্রযুক্তির ব্যবহার করে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লবকে (৩০)।
উদ্ধারের পর প্রথম দেখায় মা সোহানা জাহান চিনতে পারেননি সন্তানকে। একসময়ের স্বাস্থ্যবান ও মাথা ভর্তি চুল ওয়ালা ছেলে এখন কঙ্কালসার হয়ে গেছে। বর্তমানে পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু সোয়াইব। জানা গেছে, পাবনা সদর উপজেলার চক ছাতিয়ানী এলাকার সোহানার সন্তান সোয়াইব। বাবা অন্যত্র বিয়ে করায় মায়ের কাছেই থাকত সে। গত বছরের ২ অক্টোবর একই উপজেলার শানির দিয়ার এলাকার রফিকুল ইসলাম বিপ্লব শিশুটিকে বিস্কুট কিনে দেওয়ার কথা বলে অপহরণ করে।
ভুক্তভোগী শিশু সোয়াইব জানায়, রাতে তাকে একটি কক্ষে বন্দি করে রাখতেন রফিকুল। সহজে কিছু খেতে দিতেন না। শরীরে কামড় বসিয়ে চামড়া তুলে ফেলতেন। দেওয়া হতো সিগারেট ও কয়েলের আগুনের ছ্যাঁকা। বাম হাতের একটি আঙুলের নখ প্লাস দিয়ে উপড়ে ফেলেন। দিনের বেলা ভিক্ষা করাতেন বিপ্লব। এ বিষয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের প্রধান ডা. মাসুদুর রহমান প্রিন্স বলেন, ‘তার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। হাতের একটা আঙুল কেটে ফেলতে হবে। আশা করছি দুই মাসের মধ্যে শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠবে।’
পাবনা সদর থানার ওসি (তদন্ত) এএসএম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে অভিযুক্ত বিপ্লবকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’