জলবায়ু পরিবর্তনে সুন্দরবনে পরিবেশগত ঝুঁকি বাড়ছে। সেই সঙ্গে ইকো ট্যুরিজম নামে কমার্শিয়াল (বাণিজ্যিক) ট্যুরিজম, বিষ দিয়ে মাছ ধরা, প্লাস্টিক দূষণ, বন্যপ্রাণী শিকারের মতো মনুষ্যসৃষ্ট ঝুঁকিও রয়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারিভাবে বাস্তবসম্মত ও আধুনিক ‘বন সংরক্ষণ নীতিমালা’ তৈরির দাবি তুলছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও মনুষ্যসৃষ্ট ঝুঁকিকে মাথায় রেখে বন রক্ষায় নতুন পরিকল্পনা করতে হবে। যেখানে বাঘ, হরিণ, বানর, কুমিরসহ জলজ সম্পদ রক্ষায় আলাদা পরিকল্পনা থাকতে হবে। সুন্দরবন নিয়ে গবেষণামূলক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘সুন্দরবন একাডেমি’র পরিচালক ফারুক আহমেদ মনে করেন, সুন্দরবনের সামনে বড় দুটি বিপদ রয়েছে। এর একটি জলবায়ু পরিবর্তনে লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে ও সমুদ্রে উচ্চতা বাড়ছে, যা বনের ওপর প্রভাব ফেলছে। আরেকটা হচ্ছে বনে মনুষ্যসৃষ্ট হস্তক্ষেপ। ইকো ট্যুরিজমের নামে বর্তমানের কমার্শিয়াল ট্যুরিজম বনে সর্বনাশের কারণ। সুন্দরবনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়লে বনে জীববৈচিত্র্য থাকবে না। তিনি বলেন, এখানে বিষ দিয়ে মাছ ধরা হয়। পর্যটকরা পলিথিন ফেলছেন, যাতে বনে প্লাস্টিক দূষণ হচ্ছে। বন্যপ্রাণী শিকার, গাছগাছালি কেটে ফেলা হচ্ছে, এগুলো বন্ধ করতে হবে। মাইক্রো পলিথিন সুন্দরবনের জলজ প্রাণীর ভিতরে চলে যাচ্ছে, এতে জীবনচক্র কমে যাচ্ছে জলজ প্রাণীর। সুন্দরবনে অতিরিক্ত পর্যটক বনের ফুড চেইন নষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে। জানা যায়, সুন্দরবনের সীমানার কাছাকাছি বেসরকারি অসংখ্য রিসোর্ট গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে রাতের বেলায় উচ্চশব্দে গানবাজনা, আলোর ঝলকানিতে ঝুঁকি অনেক বাড়ছে। গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক বড়। সেখানে সুন্দরবনে পর্যটনের রাজস্ব আয় খুবই সামান্য। এ ছাড়া সুন্দরবনকে অর্থ আয়ের উৎস ভাবলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। সামান্য রাজস্বের জন্য সুন্দরবনে ট্যুরিজম ওপেন করে দেওয়া যাবে না। বনের মধ্যে চলাচল করা জলযানকেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সুন্দরবন একাডেমি নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, বনের মধ্যে উদ্বেগজনক কংক্রিটের অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। যা বনে পরিবেশগত ঝুঁকি তৈরি করছে। জানা যায়, চলতি বছর জানুয়ারিতে সুন্দরবন ভ্রমণ করেছেন ৭৬ হাজার ৩৬৩ জন পর্যটক। এতে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭৬৬ টাকা। এর মধ্যে পশ্চিম সুন্দরবনে পর্যটক ছিলেন ১৫ হাজার ৩৪৬ জন ও পূর্ব সুন্দরবনে পর্যটক ছিলেন ৬১ হাজার ১৭ জন। এদিকে সুন্দরবন সংরক্ষণের জন্য সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে। তিনি বলেন, সুন্দরবনের রক্ষিত এলাকা ২৩ থেকে ৫৩ শতাংশ করা হয়েছে। যেখানে সব ধরনের বনজসম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি কিছু জায়গায় ডলফিন অভয়ারণ্য করা হয়েছে। সেখানে ‘নো ফিসিং জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। ঝড় জলোচ্ছ্বাসের সময় বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য কিছু এলাকায় মাটির উঁচু ডিবি করা হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানি লবণাক্ত হওয়ায় মিষ্টি পানির পুকুর খনন করা হয়েছে। মাঠপর্যায়ে টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে।
শিরোনাম
- বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ ডিএসসিসির
- সাতসকালে লোহাগাড়ায় বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ৭
- ভোলায় সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহত, আহত ৬
- বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্রই আর টিকবে না : ফয়েজ আহম্মদ
- হবিগঞ্জে ১২ গ্রামে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত অর্ধশত
- গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত
- ঘোড়ার গাড়িতে ইমামের বিদায়, ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
- ঝিনাইদহে ঈদ উপলক্ষে ভিন্নধর্মী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
- লক্ষ্মীপুরে ৬ বছরের শিশু গুলিবিদ্ধ
- মুক্তির একদিন পরই বাড়ল ‘জংলি’র শো
- "ব্যাংকিং সেক্টরের সংস্কার দরকার, যা বর্তমান সরকার এককভাবে করতে পারবে না"
- সংস্কারের নামে নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করার সুযোগ নেই : কাদের গনি চৌধুরী
- যশোরের অভয়নগরে ফুচকা খেয়ে অসুস্থ দেড় শতাধিক
- দক্ষিণ আফ্রিকার দায়িত্ব ছাড়লেন ওয়াল্টার
- রাজশাহীতে বিএনপির দুইপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত একজনের মৃত্যু
- ঈদে কাতার মাতিয়ে গেলেন বাংলাদেশি একঝাঁক তারকা
- জনগণের সাথে সম্পর্ক তৈরি করাই প্রধান কাজ: মির্জা ফখরুল
- 'সাড়ে ১২ বছরের ছেলে যুদ্ধের সময়ে মানুষ খুন করতে পারে—এটা বিশ্বাসযোগ্য কথা?'
- অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, এখন আমরা স্বাধীন: রুমন
- নদীতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার
প্রকাশ:
০০:০০, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
আপডেট:
০২:১৭, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
দুই ঝুঁকিতে সুন্দরবন
জলবায়ু পরিবর্তনে লবণাক্ততা ও সমুদ্রে উচ্চতা বাড়ছে, ইকো ট্যুরিজমের নামে কমার্শিয়াল ট্যুরিজম সর্বনাশের কারণ
সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
এই বিভাগের আরও খবর