নিখোঁজের ৫৪ ঘণ্টা পর গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাবিষয়ক সহসম্পাদক রবিউল আউয়াল অন্তরকে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল ভোরে ঢাকা জেলার কামরাঙ্গীরচর থানার নবীনগরের নার্সারি গলির নূর হোসেন বাবুলের বাসা থেকে পুলিশ উদ্ধার করার পর বিকালে পটুয়াখালীতে নেওয়া হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের দাসের হাওলা গ্রামের বাসিন্দা সোলাইমান মৃধার ছেলে রবিউল আউয়াল অন্তর নিখোঁজ হন। গতকাল বিকালে পটুয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয় এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ। প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার উল্লেখ করেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত্র ১১টা থেকে ১২টা ৩৪ মিনিটের মধ্যে যে কোনো সময় অপহরণ মামলার ভিকটিম মো. রবিউল আউয়াল অন্তর (২৩)-কে কলাপাড়া থানাধীন টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়ার সুয়েজ গেটের সামনে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের বিবাদীরা অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ভিকটিম মো. রবিউল আউয়াল (অন্তর)-এর ব্যবহৃত হেলমেট ও মোটরসাইকেল পাওয়া যায়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেলের নেতৃত্বে থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকার কামরাঙ্গীরের আশ্রাফাবাদ নবীনগরের নার্সারি গলির নুর হোসেন বাবুলের বাসা থেকে মো. রবিউল আউয়াল (অন্তর)-কে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, অন্তরকে উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ৬ ফেব্রুয়ারি মহিলা কলেজ রোড কলাপাড়া পৌরসভায় তার নিজস্ব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গ্রাফিক্স ওয়ার্ল্ড থেকে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটের সময় দোকান বন্ধ করে বাসায় যাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সাদা মাইক্রোবাসে এসে ভিকটিমের মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে ভিকটিমকে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। তাৎক্ষণিক তারা মাইক্রোবাস থেকে নেমে জোরপূর্বক তাকে মাইক্রোবাসে ভিকটিমকে তুলে নিয়ে ফরিদপুরের মাওয়ায় নিয়ে ফেলে দেয়। পরে ভিকটিম নিজে বাসযোগে ঢাকায় তার বন্ধু মো. আল-আমিনের কাছে চলে যায়। ওই দিন রাতে মো. আল-আমিন ভিকটিমকে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় তার বন্ধুর নুর হোসেন বাবুলের বাসায় ভাড়াটিয়া মো. আসাদের কাছে রেখে আসে। ৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে তার বন্ধু মো. আল-আমিন নুর হোসেন বাবুলের বাসায় এসে আসাদকে জানায় যে, তার সঙ্গে থাকা তার বন্ধু মো. রবিউল আউয়াল অন্তরের পারিবারিক সমস্যার কারণে তাদের বাসায় কিছুদিন থাকবে এবং সমস্যা সমাধান হলে সে চলে যাবে। তিনি ভিকটিমকে সরল বিশ্বাসে সেখানে থাকতে দেয়। ভিকটিম তার বাসা থেকে বের হতো না। তারা বাইরে থেকে খাবার এনে দিলে ভিকটিম রুমে বসে খাবার খেত। সে আরও জানায় যে, ভিকটিম অন্তরের মাধ্যমে জানতে পারে তার এলাকায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে তাদের আন্দোলন চলছে এই আন্দোলন সফল হলে সে তার বাসায় চলে যাবে। পরে অন্তরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় এবং সাক্ষী মো. আনাছ আহমেদ, মো. আসাদ ও আল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নিয়ে আসে পুলিশ।