চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের অন্তবিভাগে গত এক বছরে (২০২৪) মোট পুরুষ রোগী চিকিৎসা নেয় ১ হাজার ২৮৮ জন। এর মধ্যে ২০ শতাংশই, ২৫৭ জন গলদেশ ক্যান্সারে আক্রান্ত। পক্ষান্তরে, একই সময়ে মহিলা রোগী চিকিৎসা নেয় ১ হাজার ৮২০ জন। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, ৪৩৭ জন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত। ফলে বর্তমানে পুরুষরা গলদেশের ক্যান্সার এবং মহিলারা বেশি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছে। এ ছাড়াও আক্রান্ত হচ্ছে- জরায়ুমুখ ক্যান্সার, অন্ত্র ও মলদ্বার ক্যান্সার, খাদ্যনালি ক্যান্সার, পাকস্থলী ক্যান্সার ও ফুসফুস ক্যান্সার। আজ বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। এবার দিবসের উপজীব্য বিষয় ‘বৈচিত্র্যে ঐক্যবদ্ধ’। দিবস উপলক্ষে এদিন সকালে চমেক হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগে আলোচনা সভা ও বর্ণিল র্যালির আয়োজন করা হয়েছে। চমেক হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আলী আজগর চৌধুরী বলেন, বর্তমানে পুরুষরা গলদেশ এবং মহিলার স্তন ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। কারণ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো সচেতনতা এবং সমন্বিত প্রচেষ্টা। সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই ক্যান্সারের ভয়াবহতা রুখতে হবে। তিনি বলেন, এবারের থিম হলো ‘বৈচিত্র্যে ঐক্যবদ্ধ’। স্লোগান আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, প্রতিটি ক্যান্সার রোগীর যাত্রা আলাদা। প্রতিটি রোগীর অভিজ্ঞতা, চাহিদা এবং চিকিৎসার পদ্ধতি ভিন্ন। ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে অনেক সহজ এবং কার্যকরভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব। তাই সবাইকে আহ্বান জানাই- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন।
চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে ক্যান্সার বিভাগে শয্যা আছে ৫৪টি। এর মধ্যে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য ১৫টি ও ৩০টি, অতিরিক্ত বসানো হয় ১৫টি এবং ডে কেয়ার বেড আছে ৯টি। গত বছর অন্তবিভাগে মোট ১ হাজার ২৮৮ পুরুষ রোগী চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ১৯৩ জন, ১৫ শতাংশ, খাদ্যনালি ক্যান্সারে আক্রান্ত ৯০ জন, ৭ শতাংশ, অন্ত্র ও মলদ্বার ক্যান্সারে আক্রান্ত ১৬৭ জন, ১৩ শতাংশ, পাকস্থলী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় ৯০ জন, ৭ শতাংশ ও অন্যান্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় ৪৯১ জন, ৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে, মোট মহিলা রোগী চিকিৎসা নেন ১ হাজার ৮২০ জন। এর মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ৩১০ জন, ১৭ শতাংশ, নাক-কান-গলা ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ২৭৩ জন, ১৫ শতাংশ, অন্ত্র ও মলদ্বার ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ১৪৫ জন, ৮ শতাংশ, ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ১৪৫ জন, ৮ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ৫১০ জন, ২৮ শতাংশ।