নবীজি (সা.)-এর প্রতিটি সাহাবিই তাঁকে জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। ফলে তাঁরা নিজেদের ইসলামের তরে উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন। অত্যন্ত সাহসিকতা ও বীরত্বের সঙ্গে আজীবন ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন। তেমনই একজন বীর সাহাবি জায়েদ ইবনে খাত্তাব (রা.)।
তাঁর নাম জায়েদ। উপনাম আবু আবদুর রহমান। পিতা খাত্তাব। তাঁর আরেকটি বড় পরিচয় হলো, তিনি ইসলামের আরেক বীর সৈনিক উমর (রা.)-এর বৈমাত্রেয় ভাই।
বয়সে তিনি ছিলেন উমর (রা.)-এর বড়। বংশপরম্পরা উমর (রা.)-এর জীবনীতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর মা আসমা বিনতে ওহাব ইবনে হাবিব (বনু আসাদ ইবনে খুজাইমা গোত্রের মেয়ে)। আর উমর (রা.)-এর মা হানতামা বিনতে হিশাম ইবনে মুগিরা (বনু মাখজুম গোত্রের মেয়ে)।
ইসলাম গ্রহণ করেন উমর (রা.)-এর আগে। প্রথম পর্বের হিজরতকারীদের সঙ্গে মদিনায় হিজরত করেন। হিজরতের পর রাসুল (সা.) মা’ন ইবনে আদি আল-আজলানি আল-আনসারি (রা.)-এর সঙ্গে তাঁর ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক স্থাপন করে দেন।
বদর, উহুদ, খন্দকসহ সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বাইআতে রিজওয়ান ও বিদায় হজেও রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলেন।
তিনি ছিলেন অত্যন্ত বীর ও সাহসী যোদ্ধা। ইসলামের জন্য শাহাদাতের পূর্ণ তামান্না নিয়ে তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেন। উহুদ যুদ্ধে তাঁর বর্মটি খুলে পড়ে গেলে তাঁর ভাই উমর (রা.) নিজের বর্মটি পরে নিতে বলেন। প্রতিউত্তরে তিনি ললেন, ‘আমার বর্মের প্রয়োজন নেই; তুমি যেমন শাহাদাতের আগ্রহী, আমিও আগ্রহী।’
প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.)-এর যুগে ১২ হিজরি সনে ইয়ামামার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সে যুদ্ধে মুসলমানদের পতাকাটি ছিল তাঁর হাতে। তরবারির আঘাতে বীরত্বের সঙ্গে শত্রু নিধন করতে করতে শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করেন। ভাই উমর (রা.) তাঁর শাহাদাতে ভীষণ মর্মাহত হন। তিনি আবদুর রহমান নামে এক ছেলে ও আসমা নামে এক মেয়ে রেখে যান। (তথ্যঋণ : আল-ইস্তিআব ২/৫৫০-৫৫৩; উসদুল গাবা ২/১৩৪; সিয়ার আলামিন নুবালা : ৩/১৮৪)
বিডি প্রতিদিন/মুসা