আমার নাম মো. হাদিউর রহমান। বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানায়। বেশ কয়েক বছর ধরে আমরা চার ভাই মিলে ভাগে কোরবানি দিয়ে আসছি। আমরা যখন একসঙ্গে কোরবানি দেওয়া শুরু করেছিলাম, তখন আমাদের পৃথক কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না।
আলহামদুলিল্লাহ! এখন আমি চাইলে পৃথক পশু কোরবানি করার সামর্থ্য রাখি। তবে মা-বাবা ও ভাইদের দাবি হলো আমি যেন যৌথভাবে কোরবানি দিই। আমার প্রশ্ন হলো, সামর্থ্য থাকার পরও ভাগে কোরবানি দিলে কি কোরবানি হবে?
প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, যে ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব সে যদি এককভাবে পশু কিনে কোরবানি করে অথবা অন্যের সঙ্গে ভাগে কোরবানি করে-উভয় অবস্থায় তার কোরবানি আদায় হয়ে যাবে। সুতরাং আপনি যদি ভাইদের সঙ্গে ভাগে কোরবানি দেন তাতে কোনো সমস্যা নেই।
জাবির (রা.) বলেন, আমরা হুদাইবিয়া নামক স্থানে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে একটি উটে সাতজন অংশীদার হয়ে এবং একটি গরুতেও সাতজন অংশীদার হয়ে কোরবানি করেছি। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ২৮০৯)
এ ক্ষেত্রে আত্মপ্রশান্তির জন্য আপনি আপনার অংশ বাড়িয়ে নিতে পারেন। যেমন-আপনার তিন ভাই তিন ভাগের টাকা দিল এবং আপনি চার ভাগের টাকা দিলেন। তবে সমানভাবে অংশ নিলেও কোনো সমস্যা নেই।
শরিকানায় বা ভাগে কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে অংশীদারের নিয়ত, বিশ্বাস ও উপার্জনের হালাল-হারাম বিবেচনা করা আবশ্যক। এ ছাড়া কোরবানির অন্য শর্তগুলোও গুরুত্বের সঙ্গে রক্ষা করা প্রয়োজন। ফাতাওয়ায়ে আলমগিরিতে বলা হয়েছে, ‘গরু ও উট সাতজনের পক্ষ থেকে যথেষ্ট হবে, যখন তাদের সবাই আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করবে। সাত সংখ্যা নির্ধারণের ফলে অতিরিক্ত অংশীদার গ্রহণ করা যাবে না। তবে সাতের কম অংশীদারে কোনো সমস্যা নেই।’ (৫/৩০৪)
আলেমরা বলেন, সবচেয়ে উত্তম হলো কোরবানির কিছুদিন আগে পশু কেনা এবং তা যত্নের সঙ্গে লালন-পালন করার পর কোরবানি দেওয়া। লালন-পালন থেকে কোরবানি দেওয়া পর্যন্ত সব কাজ আনন্দের সঙ্গে করলে আল্লাহর দরবারে অধিক সওয়াবের আশা করা যায়।
আল্লাহ সব বিষয়ে সবচেয়ে ভালো জানেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই