সরকারি হিসাবে বুধবারের বিক্ষোভে লেহতে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ৮০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ জারি করা হয়। তবে রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, দিনের প্রথমার্ধে ঘটে যাওয়া দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা বাদ দিলে লাদাখের পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে।
সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত করে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দিতে হবে লাদাখকে। এমনই দাবি জানিয়ে লেহতে বুধবার বিক্ষোভ চলেছে দিনভর। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেয়েছে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীকে। সেই প্রেক্ষাপটেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রণালয় জানিয়েছে, আপাতত লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বুধবার বিকেল থেকে নতুন করে কোনও হিংসার ঘটনাও ঘটেনি।
সরকারি হিসাবে বুধবারের বিক্ষোভে লেহতে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ৮০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ জারি করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার লাদাখবাসীকে পর্যাপ্ত সাংবিধানিক সুরক্ষা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
লাদাখকে রাজ্য হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে, এমন দাবিতে বুধবার লেহতে বিক্ষোভ শুরু হয়। ধীরে ধীরে হিংসার চেহারা নেয় সেই বিক্ষোভ। নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যু হয়। আহত হন প্রায় ৮০ জন, যার মধ্যে ৪০ জন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্ফু জারি হয়।
উল্লেখ্য, আগামী ৬ অক্টোবর লাদাখের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে কেন্দ্রের। তাই তার আগেই বুধবার লেহতে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। অভিযোগ, বিজেপির পার্টি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। পার্টি অফিসের সামনে থাকা একটি পুলিশের গাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। লাঠিচার্জও করা হয়।
লাদাখের বুধবারের বিক্ষোভ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন সোনম ওয়াংচুক। স্পষ্ট জানিয়েছেন, কোনও সহিংস আন্দোলনকে সমর্থন করেন না তিনি। সোনম বলেন, এটি লাদাখের জন্য তো বটেই, ব্যক্তিগত ভাবে আমার জন্যও সবচেয়ে দুঃখের দিন! কারণ, গত পাঁচ বছর ধরে আমরা যে পথে হাঁটছি, তা ছিল শান্তিপূর্ণ। আমরা পাঁচ বার অনশন করেছি, লেহ থেকে দিল্লি পর্যন্ত হেঁটেছি। কিন্তু আজ এই হিংসা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমাদের শান্তির বার্তা ব্যর্থ হতে দেখলাম। বুধবারই অনশন প্রত্যাহার করার ঘোষণা করেছেন সোনম। তবে তাঁর আরও দাবি, লাদাখের রাজনৈতিক দলগুলি অযোগ্য। তারা তরুণ প্রজন্মকে সঠিক দিশা দেখাতে ব্যর্থ।
অন্য দিকে, লাদাখের অশান্ত পরিস্থিতির জন্য সোনমকেই দায়ী করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বলা হয়েছে, তাঁর ‘উস্কানিমূলক’ মন্তব্যের জন্যই লাদাখ অশান্ত হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তার বক্তব্যে ‘উদ্বুদ্ধ’ হয়ে অনশনস্থল ছেড়ে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ও সরকারি দফতরে হামলা চালিয়েছে উন্মত্ত জনতা। কেন্দ্রের দাবি, এই অশান্তির আগুনে ঘি ঢালা হয়েছে ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে’।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল