শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে রাঙামাটিতে বইছে উৎসবের আমেজ। রঙ তুলির নিপুণ আঁচড়ে রঙিন রূপে সাজানো হয়েছে দেবী দুর্গা ও তার সঙ্গীদের—কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতীকে। নিখুঁত কারুকাজ আর বাহারি গহনায় অপরূপ রূপ পেয়েছে দেবী মহামায়া। এখন শুধু অপেক্ষা ষষ্ঠীর দিনের আনুষ্ঠানিক পূজার।
হিন্দু শাস্ত্র মতে, দেবী দুর্গার চার সন্তান- কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতী—একসঙ্গে পূজিত হন দুর্গোৎসবে। এদের মধ্যে কার্তিক যুদ্ধ ও সাহসের প্রতীক, গণেশ বিঘ্ননাশক, লক্ষ্মী ধন-সম্পদের দেবী এবং সরস্বতী জ্ঞানের দেবী। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, এ চার দেব-দেবী সমাজের চার বর্ণের প্রতিনিধিত্ব করেন।
রাঙামাটি জেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার ১০টি উপজেলার ৪১টি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। শুধু সদর উপজেলাতেই নির্মিত হয়েছে ১৫টিরও বেশি মণ্ডপ। অধিকাংশ মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। চলছে রঙ-তুলির শেষ মুহূর্তের ছোঁয়া এবং মণ্ডপ সাজানোর কাজ। আলোকসজ্জার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে লাল, নীল, সবুজসহ নানা রঙের বাতি।
পাহাড়ি জনপদেও পূজার আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে। সনাতন বাঙালিদের পাশাপাশি দুর্গাপূজায় অংশ নিচ্ছে ত্রিপুরাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীও। রাঙামাটি শহরের গর্জনতলী এলাকার ত্রিপুরা পল্লীতে নির্মিত হয়েছে দেবী প্রতিমা।
গর্জনতলী দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ত্রিপুরা বলেন, ‘ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় বাঙালি সম্প্রদায়ের পাশাপাশি আমরাও দুর্গাপূজা উদযাপন করি। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষরা সাড়ম্বরে দুর্গোৎসব পালন করছে।’
অন্যদিকে, দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে জোর প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাঙামাটির ১০টি উপজেলাতেই চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মণ্ডপগুলো আনা হচ্ছে সিসিটিভির আওতায়।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. হাবিব উল্লাহ জানান, ‘উৎসব পালনকারীসহ সকল দর্শনার্থীদের জন্য নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ও সুবিধার ব্যবস্থা। পাহাড়ে সকল জাতিগোষ্ঠীর সম্প্রীতির বার্তা বয়ে আনুক এ উৎসব- এই প্রত্যাশা করছি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ