যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কার্বন ও ক্ষতিকর বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে আগে যে কড়াকড়ি ছিল, তা এখন শিথিল করতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
বুধবার (১১ জুন) পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা (ইপিএ) এই প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবেশবিরোধী অবস্থানের ধারাবাহিকতায় এটি সর্বশেষ উদ্যোগ।
ইপিএ প্রধান লি জেলডিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি অর্থনীতির উন্নয়নকেও গুরুত্ব দিচ্ছি।’
প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে কয়লাভিত্তিক ও গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড ও পারদসহ অন্যান্য ক্ষতিকর গ্যাসের নির্গমন নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান বিধিনিষেধ বাতিলের পরিকল্পনা।
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দূষণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এই নিয়মগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশপাশে বসবাসকারী মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য চালু করা হয়েছিল। কারণ, এসব দূষণ স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে ও শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা তৈরি করে।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি, আগের সরকারের এসব নিয়ম বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় বাড়াচ্ছে। এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও প্রযুক্তির বিস্তারে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়েছে, সেই বাস্তবতা মাথায় রেখেই নীতিমালায় পরিবর্তন আনা জরুরি।
ট্রাম্প প্রশাসনের এ ঘোষণার কড়া সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ২শ’র বেশি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। তারা বলছেন, এটি ইপিএ-এর মূল লক্ষ্য, জনস্বাস্থ্য রক্ষার সম্পূর্ণ বিপরীত।
তাদের মতে, এই পরিবর্তন গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূষণ বাড়াতে পারে।
ইপিএ প্রধান জেলডিন দাবি করেন, নতুন নিয়ম চালু হলেও বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর দূষণ আগের মাত্রার বাইরে যাবে না।
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নিরপেক্ষ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইনস্টিটিউট ফর পলিসি ইন্টিগ্রিটি’র সাম্প্রতিক এক পরিবেশ গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ খাত ইতোমধ্যেই বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ দূষণকারীর তালিকায় আছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ খাতকে একটি দেশ ধরা হয়, তাহলে ২০২২ সালে এটি বিশ্বের ছয় নম্বর সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশ হতো। এছাড়াও ১৯৯০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত এটি বিশ্বের মোট দূষণের পাঁচ শতাংশের জন্য দায়ী ছিল।
সূত্র : এপি
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত