ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে যে ঝটিকা অভিযান চালিয়েছে, তার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, “রাতের আঁধারে ভারত পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে বড় ধরনের নাশকতা ঘটানোর উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। অতীতেও তারা এ ধরনের হামলা চালিয়েছে। তবে বরাবরের মতো এবারও আল্লাহর কৃপা, জাতির সমর্থন ও দোয়ায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনী শক্ত প্রতিরোধ গড়েছে এবং দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানের এই দৃঢ় জবাব শত্রু পক্ষকে বিশৃঙ্খল করে দিয়েছে। পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে আমাদের শক্তি, শৌর্য ও সামর্থ্যের প্রমাণ আবারও মিলেছে। আমাদের সেনাবাহিনী ইস্পাত-কঠিন শক্তিতে সজ্জিত।”
গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। প্রায় দুই সপ্তাহের টানাপড়েনের পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।
শুধু ২৫ মিনিটে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালিয়ে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ভারত। এতে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছে বলে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, যদিও পাকিস্তান দাবি করেছে, নিহতের সংখ্যা ২৬ জন।
এছাড়া নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে কমপক্ষে ১০ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছে।
পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা অবশ্য এখন পর্যন্ত তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, “আমাদের যুদ্ধবিমান পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল এবং পাকিস্তান বিমান বাহিনী ভারতের যুদ্ধবিমানের যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুতর বিঘ্ন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। যার ফলে ভারতের বিমানগুলো শ্রীনগর থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। আমরা চাইলে আরও অনেক বিমান গুলি করে নামাতে পারতাম।”
তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাহসিকতা ও এই বিজয়ের কৃতিত্ব পুরো জাতির। জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক