চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম, প্রশ্নফাঁস ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেছে চাকরিপ্রার্থীরা। কর্মসূচি থেকে প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানানো হয়।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, গত ২০ জুন চুয়াডাঙ্গা জেলার ৩৯টি স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ১৯ জুন রাতভর সিভিল সার্জন কার্যালয় খোলা রাখা হয়। পরীক্ষা গ্রহণে আগের দিন কিছু পরীক্ষার্থীর আকষ্মিক কেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তীতে পরীক্ষা গ্রহণের পর একাধিক অনুপস্থিত প্রার্থীকে উত্তীর্ণ করে ফল ঘোষণা করা হয়। একই সাথে নিয়ম লঙ্ঘন করে যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে অন্য ওয়ার্ডের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হয়।
আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের চাকরিপ্রার্থী তামান্না খাতুন বলেন, পরীক্ষায় আমার কেন্দ্র ছিলো চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজে। কেন্দ্রের বাইরে অনুপস্থিতদের তালিকা দেখেছি। অথচ পরীক্ষার ফলাফলে তাদের নাম রয়েছে। এটা স্পষ্ট অনিয়ম।
সোমবার সকালে আন্দোলন চলাকালে ঘটনাস্থলে আসেন সেনাবাহিনী ও ডিবি পুলিশের দুটি দল। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন প্রশাসনিক দায়িত্বশীলরা তাদের অভিযোগ শুনে সমাধানের পরামর্শ দেবেন বলে আশ্বাস দিলেও পরবর্তিতে তাদের সাথে কোন কথা না বলে চলে যান।
আরেক প্রার্থী সবুজ হোসেন বলেন, পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। যাদের নামে টাকা লেনদেনের অভিযোগ ছিলো তারাই চুড়ান্ত নিয়োগে সুপারিশ পেয়েছেন। এমনকি একজন প্রার্থীর শুধু ভাইভা নিয়েই তাকে নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছে। এটা নিয়োগ নয়, এটা রীতিমতো প্রতারণা।
চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতারাও। তারা বলেন, এই ধরনের অনিয়ম শুধু নিয়োগ প্রক্রিয়াকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, বরং পুরো প্রশাসনের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করছে।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য-সচিব ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়াউদ্দীন আহমেদ বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে বলে আসছেন, সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। প্রশ্নফাঁস হয়নি।
প্রসঙ্গত, চুয়াডাঙ্গা জেলায় স্বাস্থ্য সহকারী পদের ৩৯টি শূন্য পদের বিপরীতে চুয়াডাঙ্গা জেলায় আবেদন করেন ১৩,৬৬৮ জন প্রার্থী। লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৪,৮৭৪ জন। পরীক্ষাটি ২০ জুন জেলায় একযোগে ১৯টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল প্রকাশিত হয় ২২ জুন। অভিযোগ রয়েছে, ফলাফল ঘোষণার পরদিনই তাতে হস্তক্ষেপ করে অনুপস্থিতদের নাম যোগ করা হয়। এর মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশ না নেয়া ব্যক্তিদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল