মানিকগঞ্জ সবজির জন্য বিখ্যাত। এখানকর সবজি দেখতে সুন্দর ও সুস্বাদু হওয়ায় দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে। সেই সাথে জেলায় গড়ে উঠেছে বড় বড় সবজির আড়ৎ। আড়ৎ আর খুচড়া বাজারে সবজির দামের গার্থক্য অনেক। অনেক ক্ষেত্রে দ্বিগুণেরও বেশি। সবজি চাষিরা সাধারণত তাদের উৎপাদিত পণ্য আড়তে নিয়ে বিক্রি করেন। কিন্তু শ্রমিক দিয়ে সবজি তুলে ভ্যানে করে সবজি আড়তে আনার পর সঠিক মূল্য পান না তারা। পাইকারদের জন্য বসে থাকতে থাকতে হতাশ হয়ে অবশেষে কমদামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হন। চাহিদা বেশি থাকলে কিছু ভালো দাম পাওয়া যায় অনেক সময় উৎপাদিত সবজি নিয়ে বসে থাকলেও পাইকারদের দেখা মিলে না।
সরেজমিনে দেখা যায় আড়তে এককেজি ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৭ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ১৫ থেকে ১৮ টাকা, ঝিঙ্গে প্রতি কেজি ১২ থেকে ১৪ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ১০ থেকে ১২ টাকা, ঢেঁরশ প্রতি কেজি ৮ থেকে ১২ টাকা, কুমড়া প্রতি পিস ৮ থেকে ১২ টাকা, মিষ্টি লাউ প্রতি পিস ১৫ থেকে ১৮ টাকা, লাউ প্রতি পিস ১০ থেকে ১২ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০ থেকে ১৫ টাকা, করল্লা প্রতি কেজি ১২ থেকে ১৫ টাকা, ভালো মানের লেবুর দাম মাত্র ৪ টাকা হালি। কাঁচা মরিচ এক কেজি বিক্রী পঁচিশ টাকা, একটি বড় মাপের মিষ্টি কুমড়া ত্রিশ টাকা। অথচ আড়ৎ থেকে কিছ দূরেই খুচরা বাজারে এক কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ষাট টাকা। এক হালি লেবু ১০ থেকে ১৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হয় ১০০ টাকার উপরে।। প্রায় সবগুলিই পণ্য দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে রাস্তার পাড়ে অবস্থিত অস্থায়ী দোকান ও ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের দোকানে কমদামে বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি। শহরের লিয়াকত আলী নামে (৫৬) নামে এক ক্রেতা বলেন, আড়ৎ থেকে ১০ হালি কাগজি লেবু কিনেছি ৪০ টাকা দিয়ে আর মরিচ এক কেজি ২৫ টাকা। সকল প্রকার সবজি আমি আড়ৎ থেকে আনি সকল কিছুই অর্ধেক দাম। সরকারি চাকুরীজীবী নিলুফা আক্তার জানান, সপ্তাহে একদিন আড়ৎ থেকে সওদা করি। কম দামে টাটকা জিনিষ পাওয়া যায়।
কৃষক ফজলু মিয়া বলেন, কৃষিকাজ আমার পূর্ব পুরুষ থেকে। সবসময় মহাজনরা আমাদের ঠকায়। বিক্রি করার সময় কমদাম কিন্তু কিনতে গেলে ডবল টাকা দিয়ে কিনতে হয়। আজ ধুন্দল বেচলাম পনর টাকা কেজি। খুচড়া বাজারে ৩০/৪০ চল্লিশ টাকা কেজি। সরকার যদি মূল্য নির্ধারণ করে দিতো তাহলে কৃষকরা বাচতো। কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জেলা সভাপতি এবিএম সামছুন্নবী তুলিপ বলেন, বাজারের এ অসঙ্গতির বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। পাইকারী ও খুচড়া বাজারে পণ্যের মূল্য আকাশ-জমিন ফারাক। আমরা জনগণকে সচেতন করতে পারি। বাজারের বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করতে পারি। আমাদের কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার নেই। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মানিকগঞ্জের এর সহকারী পরিচালক ফারহানা ইসলাম অজন্তা বলেন, কোন ব্যবসায়ী যদি অতিরিক্ত মূল্য রাখেন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ