জেলায় লাইন থাকলেও চালু হয়নি ঢাকা-গোপালগঞ্জ রেল যোগাযোগ। গোপালগঞ্জ থেকে শুধু একটি ট্রেন রাজশাহী যাতায়াত করে। গোপালগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনে ঢাকাসহ অন্য জেলায় ভ্রমণের। সে সৌভাগ্য তাদের এখনো হয়নি। রেল যোগাযোগ চালু হলে জেলায় কমবে সড়ক দুর্ঘটনা ও বাঁচবে খরচ দাবি বাসিন্দাদের। সে সুযোগ হাতের মুঠোয় এসেও ধরা না দেওয়ায় হতাশ তারা।গোপালগঞ্জের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সম্প্রতি রাজধানী ঢাকায় সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল মহাব্যবস্থাপক বরাবর এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। ৪-৫ ঘণ্টার এই যাত্রা সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল ও দুর্ঘটনাপ্রবণ। আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গত তিন বছরে গোপালগঞ্জে ৩৩২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৬৬ জনের প্রাণহানি ও আহত হয়েছেন ৪৯২ জন। এতে বোঝা যায় সড়ক পথে যাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ডিসি তাঁর প্রস্তাবে জানিয়েছেন, ‘গোপালগঞ্জের বিপুলসংখ্যক ঢাকাগামী শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর যাতায়াতের সুবিধা, ক্রমবর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা এবং সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গোবরা স্টেশন থেকে অন্তত দুটি সরাসরি ট্রেন চালু অত্যন্ত জরুরি।’ গোপালগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স সহসভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসকের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও নড়াইলের হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্য ও সাশ্রয়ী ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। এটি শুধু সময় ও অর্থই সাশ্রয় করবে না, সড়ক দুর্ঘটনা কমাবে। রিকশাচালক মফিজ উদ্দিন, ইজিবাইক চালক ফরহাদ হোসেন, বড় বজারের দিনমজুর আ. রহমান, মুদি দোকানি আলম মিয়া, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন বলেন, ঢাকা-গোপালগঞ্জ ট্রেন চালু হলে ভ্রমণ হবে স্বাশ্রয়ী ও নিরাপদ। বাসে ৫০০ টাকা ভাড়া গুনতে হয়। ট্রেনে তা হবে অর্ধেক। দুর্ঘটনার ঝুঁকিও হ্রাস পাবে। বর্তমানে গোপালগঞ্জ শহরতলির গোবরা স্টেশন থেকে প্রতিদিন সকালে একটি ট্রেন রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ট্রেনটি রাতে আবার গোপালগঞ্জ ফিরে আসে। এই স্টেশনটি বাগেরহাটের মোল্লাহাট থেকে ৫ কিলোমিটার, নড়াইলের কালিয়া থেকে ১২ এবং পিরোজপুরের উজিরপুর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে। ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বেনাপোলগামী ট্রেনগুলো গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী জংশন হয়ে যাতায়াত করে। এরপরও গোপালগঞ্জসহ আশপাশের জেলার যাত্রীরা রেলসেবা থেকে বঞ্চিত।