গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে সাত মাস ধরে বন্ধ রয়েছে ডোপ টেস্ট। গুরুত্বপূর্ণ এ পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন, নতুন চাকরি ও সরকারি নানা কাজে প্রয়োজনীয় মেডিকেল সনদপ্রত্যাশীরা। বাধ্য হয়ে অন্য জেলায় ছুটছেন তারা। এতে ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ ও সময়। এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছেন ডোপ টেস্ট কিট সরবরাহ বন্ধ থাকায় সেবা দিতে পারছেন না তারা। সংশ্লিষ্টরা জানান, কোনো ব্যক্তি মাদকাসক্ত কি না তা যাচাইয়ের জন্য এই মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়। যারা নিয়মিত মাদক বা অ্যালকোহল গ্রহণ করেন তাদের শরীরে ওই নেশাজাতীয় পদার্থের উপস্থিতি কিছুটা হলেও থেকে যায়। আর সেটিই ডোপ টেস্টের মাধ্যমে ধরা পড়ে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সরকারি চাকরিতে যোগদানের আগে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়। এরপর ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে পেশাদার চালকের লাইন্সেস পেতে হলেও ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়।
সরেজমিন জানা যায়, গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে এ পরীক্ষার প্রয়োজনীয় কিট শেষ হয়ে যাওয়ায় সাত মাস ধরে সেবাটি বন্ধ রেখেছে। মাসের পর মাস ডোপ টেস্ট করাতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন ড্রাইভিং লাইসেন্স, চাকরি আবেদন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রত্যাশীরা খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। কিট না থাকায় বাধ্য হয়ে অনেকে রংপুর বা বগুড়ায় গিয়ে করাচ্ছেন টেস্ট।
ভুক্তভোগী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ডোপ টেস্ট করাতে হাসপাতালে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছি। যেতে হবে বগুড়া না হয় রংপুর। কী যে করি? ভুক্তভোগী সেলিম মিয়া বলেন, ডোপ টেস্ট করাতে যে খরচ হতো এখন তার দ্বিগুণ টাকা অন্য জেলায় যাওয়া-আসায় খরচ হয়েছে। সঙ্গে সময় ও ভোগান্তি হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন এসে ফিরে যাচ্ছেন। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গাইবান্ধা জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোত্তালেব সরকার বকুল অভিযোগ করে বলেন, ডোপ টেস্ট বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি পরিবহন শ্রমিকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিআরটিএ গাইবান্ধা সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক কামাল আহমেদ কাজল জানান, সব কাজ সঠিক সময়ে শেষ করলেও টেস্ট সনদ পেতে দেরি হওয়ায় নতুন লাইসেন্স বা নবায়নে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিফ উর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ডোপ টেস্ট কিট সরবরাহ বন্ধ থাকায় সেবা দিতে পারছেন না তারা। নতুন করে কিট কেনার জন্য দরপত্র প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।