উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের অপসারণের এক দফা দাবিতে অচল হয়ে পড়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। গতকাল বিকাল থেকে শুরু করা হয়েছে মহাসড়ক ব্লকেডের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চল অচল কর্মসূচি। একই সঙ্গে চলছে আমরণ অনশন কর্মসূচিও। অনশন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পাঁচ শিক্ষার্থীও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করছেন শিক্ষকরা। উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন ফেসবুকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রুপ লিংকার্স ইন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় লাইভে এসে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েও পরিস্থিতি শান্ত করতে পারেননি। বরিশাল মহানগর পুলিশের বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। এতে পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলার সঙ্গে সড়কপথের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারণে বরিশাল-পটুয়াখালী ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে যানবাহন আটকে পড়েছে। পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর আগে সোমবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অনশন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রাকিব আহমেদ বলেন, রাত থেকে অনশনে থাকা শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে অসুস্থ শিক্ষার্থী স্বাক্ষর, ইমন, ওয়াহিদুর রহমান ও এনামুলকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। দাবি মেনে না-নেয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকবেন।
মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তানজীন হোসেন জানান, বর্তমানে গরম থাকায় পানি শূন্যতার কারণে চারজনকে আইভি স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও একজনের জ্বর হওয়ায় তাকে মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষকদের পদত্যাগ : উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্য মঙ্গলবার বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগকারী শিক্ষকরা হলেনথ-আইকিউএসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সোহেল চৌধুরী, সহকারী প্রক্টর আলমগীর হোসেন, শেরেবাংলা হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মো. আলমগীর মোল্লা, শেরেবাংলা হলের আবাসিক শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মামুনুর রহমান। এর আগে ৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান (ভারপ্রাপ্ত) পদ থেকে রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. গাজী জহিরুল ইসলাম, শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী অধ্যাপক আবদুল আলিম বাশার, জীবনানন্দ দাশ রিসার্স সেন্টারের পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার, শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট আবদুল আলিম বশির পদত্যাগ করেন। এ ছাড়া ৮ মে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক সুজন চন্দ্র পাল, সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে সহযোগী অধ্যাপক অসীম কুমার নন্দী ও বিজয়-২৪ হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান পদত্যাগ করেন।
উপাচার্যের লাইভে এসে প্রশ্নোত্তর :
সোমবার দিনগত রাত ১০টায় উপাচার্য শুচিতা শরমিন বিশ্ববিদ্যালয়ে লিংকার্স গ্রুপে ৪৭ মিনিটের লাইভে এসে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তার কী বার্তা জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, আন্দোলন থেকে ক্লাসে ফিরে যান। আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা যাবে। সবার জন্য শুভকামনা জানিয়ে বলেন, সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক।